‘দেনার দায়ে আত্মঘাতী হননি আলুচাষি’, মন্ত্রীর দাবিতে ক্ষোভ
ধূপগুড়িতে আত্মঘাতী রবিন বর্মন দেনার দায়ে আত্মহত্যা করেননি বলে দাবি করলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বৃহস্পতিবার অরূপবাবু টেলিফোনে জানান, তাঁর কাছে যে রিপোর্ট পৌঁছেছে তাতে রবিনবাবু ঋণের দায়ের আত্মহত্যা করেননি বলে লেখা রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “ধূপগুড়ির যুগ্ম বিডিওর কাছ থেকে যে মৌখিক রিপোর্ট পেয়েছি তাতে দেনার দায়ে ওই কৃষক আত্মহত্যা করেননি বলে জানা গিয়েছে। ওই চাষি নিজের ৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেন। তা ছাড়া তিনি শুধু চাষি নন, একজন ব্যবসায়ীও। আলু বিক্রি করে রবিন বর্মন ৮ লক্ষ টাকা হাতে পান। তা থেকে ৫০ হাজার টাকা হিমঘর মালিকের ঋণ শোধ করেন। তার দুই ছেলে চাকরি করেন। তাই দেনার দায়ে ওই কৃষক আত্মহত্যা করেননি। এর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে।”
রবিনবাবুর পরিবারের লোকজনের দাবি, তাঁদের বসত ভিটে ছাড়া চাষের জমি নেই। তাঁর দুই ছেলে দিনমজুরি করেন। এলাকার বাসিন্দারা মন্ত্রীর বক্তব্য জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রবিনবাবুর স্ত্রী আরতি দেবী বলেন, “আলু চাষের নেশা ওঁর মাথায় চেপে বসেছিল। আলু আমাদের হারানো সম্পদ ফিরিয়ে দেবে বলে স্বপ্ন দেখতেন। আলুই শেষে কাল হল। আমাদের অবাবের সংসার। অথচ মন্ত্রীর কাছে কেন এমন রিপোর্ট গেল কে জানে?” এলাকার সিপিএম নেতারা জানান, চাষিদের মদ্যে অনেকেই অন্যের জমি চুক্তিতে নিয়ে আলু চাষ করে থাকেন। তাঁদেরও আলু চাষি বলা হয়। এ ক্ষেত্রে রবিনবাবু শুধু আলুচাষি নন বলাটা দুর্ভাগ্যজনক বলে সিপিএম নেতারা জানান। এ দিকে, এদিন বিধানসভায় আলুচাষির আত্মহত্যার বিষয়টি তোলেন ধূপগুড়ির সিপিএম বিধায়ক মমতা রায়। তাঁর কথায়, “ওই পরিবারকে সাহায্য ও ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।” আগামী শনিবার মমতা দেবী আত্মঘাতী কৃষকের বাড়িতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে রবিনবাবুর পরিবারের কাছে ১ বস্তা চাল ও শাড়ি ও শীতের পোশাক দেওয়া হয়েছে। ধূপগুড়ির বিডিও অর্ঘ্য প্রধান বলেন, “আত্মঘাতী চাষির পরিবারকে সাহায্য করা হয়েছে।” এদিন ধূপগুড়িতে মিছিল বের করে সিপিএম-এর যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সংগঠনের জেলা নেতা জয়ন্ত মজুমদার বলেন, “মৃত চাষির পরিবারকে উপযুক্ত আর্থিক অনুদান দিতে হবে। হিমঘরে থাকা আলু ন্যায্য দামে সরকারকে কিনে নিতে হবে। রাজ্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না-করলে পথে বসবেন বহু কৃষক।” ধূপগুড়ির তৃণমূল নেতা অশোক বর্মন জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওই পরিবার এবং আলু চাষিদের বিষয়টি নিশ্চয়ই বিবেচনা করবেন। রবিনবাবুর প্রতিবেশীদের কয়েকজন জানান, জমিতে আলু ফলনের পরে ১০ টন আলুর দাম ৬৫ হাজার টাকা উঠেছিল। কয়েকজন রবিনবাবুকে আলু কেনার জন্য প্রস্তাব দেন। তবে তিনি বিক্রি করেন নি। বেশি দাম পাওয়ার আশায় ৮০ টন আলু তিনি ও তাঁর মতো কয়েকজন কৃষক হিমঘরে আলু রেখে দেন। দাম কমতে থাকায় সেপ্টেম্বর মাসে ওই ক্ষতি মেটাতে ফের সাড়ে ১৩ বিঘা জমি লিজ নেন। আলু চাষ করার জন্য নতুন করে ঋণ পাননি রবিনবাবু। তখন জমি বাবদ লিজের টাকা ফেরত নিলেও আগের আলু বিক্রি করতে না-পেরে রবিনবাবু মানসিকবাবে ভেঙে পড়েন বলে ওই প্রতিবেশীরা জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.