নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
অবিলম্বে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ চুক্তি রূপায়িত না-হলে পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে নতুন করে আন্দোলন শুরুর আশঙ্কা করছে সিপিএম। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে অনিল বিশ্বাস ভবনে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এই ব্যাপারে তাঁদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। সিপিএম আগেই জানিয়েছে, তাঁরা ত্রুটি মুক্ত জিটিএ চুক্তির পক্ষে। সিপিএমের বক্তব্য, সাংবিধানিক স্বীকৃতি রয়েছে পাহাড়ে এমন একটি স্বায়ত্বশাসনের পক্ষে তাঁরা। এখন যে চুক্তি হয়েছে সেটা পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবিকেই উসকে দেবে। রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী বক্তব্য, “যখন চুক্তি হয়েই গিয়েছে, তখন তা কার্যকর করতে দেরি করা হচ্ছে কেন স্পষ্ট নয়। এমন চলতে থাকলে পাহাড়ে নতুন করে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু হতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রী এই আশঙ্কা যে অমূলক নয় সেটা গোর্খা যুব মোর্চার সাম্প্রতিক কার্যকলাপেই প্রমাণ মিলেছে। যুব মোর্চার তরফ থেকে সম্প্রতি কালিম্পং মহকুমা এলাকা সভা করে গোর্খাল্যান্ডের দাবি তোলা হয়। রাজনৈতিক মহল এটা মোর্চার ‘রাজনৈতিক কৌশল’ বলে মনে করলেও প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর আশঙ্কা, “জিটিএ চুক্তি কার্যকর করা নিয়ে টালবাহানা হলে তৃতীয় কোনও শক্তি পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে সামনে চলে আসতেই পারে। তাতে ফের উত্তেজনা বাড়তে পারে পাহাড়ে।” পাহাড়ে ষষ্ঠ তফসিলে স্বায়ত্বশাসন দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্র ও পূর্বতন বাম সরকার একমত হওয়ার পরেও তা নিয়ে টালবাহানা চলাতেই যে মোর্চার নেতৃত্বে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সে কথা এদিন স্বীকার করেছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার জিটিএ-র এলাকা নির্ধারণ নিয়ে যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে তার রিপোর্টে ‘ভারসাম্য’ বজায় রাখার দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।সম্প্রতি শিলিগুড়ি পুরসভা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতে হকার উচ্ছেদের যে কাজে নেমেছে তারও সমালোচনা করেন তিনি। অশোকবাবু বলেন, “আমাদের আমলা হকার উচ্ছেদের সময়েই প্রতিবারই বিকল্প ব্যবস্থা করে সেই কাজে নামা হয়েছে। এ ভাবেই শহরের নিবেদিতা মার্কেট, হকার্স কর্ণার, চম্পাসারি, হায়দরপাড়া, ডিআই ফান্ড মার্কেটে বাজার গড়ে তোলা হয়। এ ক্ষেত্রেও বিকল্প ব্যবস্থা করেই হকার উচ্ছেদের নামা উচিত পুরসভার।” বুধবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট চালু করেন। তার আগে এসজেডিএ-র পক্ষ থেকে নিউ জলপাইগুড়িটে টি পার্কের উদ্বোধন করা হয়। অশোকবাবু দাবি, “এই দুটি প্রকল্পই আমাদের সময়ে হাতে নেওয়া হয়। গৌতমবাবুরা কেবল উদ্বোধন করলেন। কিন্তু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সে কথা স্বীকার করার সৌজন্য দেখাতে পারেননি।” তার দাবি, খুব শীঘ্রই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট, ট্রমা সেন্টার, ডেন্টাল কলেজের ভবন উদ্বোধন হবে। সেগুলিও তাঁদেরই আমলে কাজ শুরু করা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজকে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল বলে ঘোষণা করেছেন সেটাও তাদেরই আমলে কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ করে। ওই বরাদ্দের মোট পরিমাণ ছিল ২৬ কোটি টাকা। অশোকবাবু এদিন প্রশ্ন তোলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন যে সমস্ত প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন সেগুলির কী হল? এটা প্রকাশ্যে জানানো হোক।” |