|
|
|
|
বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে শীতের পাল্লা বাংলার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বর্ধমানের পানাগড়ে শৈত্যপ্রবাহ। এমনকী কলকাতার কাছেই হাওড়ার উলুবেড়িয়াতেও শৈত্যপ্রবাহ।
কিন্তু শৈত্যপ্রবাহ নেই ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে। নেই বিহারের পটনাতেও।
অথচ উত্তর ভারতের কনকনে ঠান্ডা হাওয়া প্রথমে ঢোকে ঝাড়খণ্ড-বিহারেই। সেখান থেকে তা আসে দক্ষিণবঙ্গে। এ বারেও আসছে। কিন্তু তাপমাত্রা নামার হারে দক্ষিণবঙ্গ হারিয়ে দিচ্ছে ওই দুই রাজ্যকে।
চলতি মরসুমে এ ভাবেই ভেল্কিবাজি চলছে শীতের। আর সেই ভেল্কিতে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে রীতিমতো পাল্লা দিচ্ছে দক্ষিণবঙ্গ!
এটা হচ্ছে কী ভাবে?
আবহবিদেরা বলছেন, দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ খুব কম থাকায় এখানে তাপমাত্রা দ্রুত নামছে। বিহারে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ খুব বেশি। তাই সেখানে কুয়াশার দাপট চলছে সারা দিনই। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে যাওয়ার হার বেড়ে গিয়েছে। পটনায় সারা দিন কনকনে ঠান্ডা থাকলেও সেখানে কিন্তু শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। |
|
পূর্ব ভারতের সমতলে গয়া এমনিতেই শীতপ্রবণ এলাকা। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে এই সময়ের স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। কিন্তু পটনায় এখনকার স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি নীচে নেমেছে তাপমাত্রা। ঝাড়খণ্ডের রাঁচি এবং জামশেদপুরে তাপমাত্রা নেমেছে স্বাভাবিকের থেকে যথাক্রমে তিন এবং ছয় ডিগ্রি নীচে।
অথচ শৈত্যপ্রবাহের পথ তৈরি করে দিয়ে স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি নীচে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া, শ্রীনিকেতন, উলুবেড়িয়া ও মগরায়। বর্ধমানের পানাগড়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ছয় ডিগ্রি নীচে নেমেছে। দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান (শিল্পাঞ্চল), বীরভূম, হাওড়া (একাংশ) এবং হুগলি (একাংশ)-তে বুধবার থেকেই বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এবং উত্তর ভারত থেকে আসা উত্তুরে হাওয়া বাধা না-পাওয়া পর্যন্ত সেই শৈত্যপ্রবাহ চলবে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন আবহবিদেরা।
দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সঙ্গে নামছে কলকাতার তাপমাত্রাও। বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার তা কমে হয়েছে ১০.৮ ডিগ্রি। এই সময়ের স্বাভাবিকের থেকে এটা তিন ডিগ্রি কম। হাওয়া অফিসের আশা, এ বার বড়দিনে জব্বর শীতের সঙ্গ পাবে বড়দিনের মহানগরী। বঞ্চিত হবে না দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলা, এমনকী উত্তরবঙ্গও।
এ বার শীতের শুরু থেকে কুয়াশার দাপটে উত্তরবঙ্গের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেমন নামতে পারছিল না। সেখানে অনেকটা পটনার মতো আবহাওয়া ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের অনেকটা নীচে চলে যাওয়ায় দিনের বেলা কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছিল। সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে।
উত্তরবঙ্গের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার মালদহের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক ধাক্কায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে হয়েছে ৯.৮ ডিগ্রি। যা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি কম। কোচবিহারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও কমে ১০ ডিগ্রির নীচে নেমে এসেছে। তাপমাত্রা কমে গিয়েছে বাগডোগরা এবং জলপাইগুড়িতেও।
আবহবিদদের আশা, আসন্ন বড়দিনে দক্ষিণবঙ্গের মতো উত্তরবঙ্গের মানুষও জমিয়ে শীত উপভোগ করতে পারবেন।
|
পিছনে দৌড় পারদের |
পশ্চিমবঙ্গ |
এলাকা |
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা |
স্বাভাবিকের কতটা কম |
পানাগড় |
৫.২ |
-৬ |
শ্রীনিকেতন |
৬.৮ |
-৫ |
উলুবেড়িয়া |
৭.৪ |
-৬ |
ঝাড়খণ্ড |
রাঁচি |
৭.২ |
-৩ |
জামশেদপুর |
৬.২ |
-৬ |
বিহার |
পটনা |
৬.৫ |
-৩ |
গয়া |
৪.৪ |
-৫ |
|
|
|
|
|
|