হিঙ্গলগঞ্জে কংক্রিটের কালভার্টের দাবি পূরণ হল না এখনও
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের সুবিধার্থে কাঠের নড়বড়ে সেতু ভেঙে ঠিক হয়েছিল কংক্রিটের কালভার্ট করা হবে। গত কয়েক মাস হচ্ছে এখনও পর্যন্ত কালভার্ট তো হলই না বরং কালভার্টের পরিবর্তে বালির বস্তা দেওয়া হয়েছে সেখানে। ফলে মজে যাওয়া নদীর জলও আটকে গিয়েছে। বর্ষাকালে তা সমস্যা আরও বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা।
মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হিঙ্গলগঞ্জের রায়মঙ্গল নদী থেকে বেরিয়ে গোমতী নদী যোগেশগঞ্জ বাজার ঘুরে হেমনগর হয়ে ফের রায়মঙ্গলে গিয়ে মিশেছে। বর্তমানে যোগেশগঞ্জ বাজারের কাছে নদী মজে গিয়ে সরু খালের আকার নিয়েছে। দীর্ঘ বছর আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই খালের উপর অস্থায়ী ভাবে একটা কাঠের সেতু করে দেওয়া হয়েছিল। ঠিক মতো মেরামতির অভাবে কাঠ ভেঙে গিয়ে নড়বড়ে চেহারা নেয় সেতু। যে কোনও মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে বড় রকম দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে সেখানে একটা কংক্রিটের কালভার্টের দাবি করে। গত কয়েক মাস আগে মহকুমার পূর্ত ও সড়ক দফতর দুলদুলি থেকে জঙ্গল লাগোয়া হেমনগর পর্যন্ত পিচ রাস্তা করার উদ্যোগ নেয়। ওই সময়ে ঠিকাদারের লোকজন কাঠের সেতুটি ভেঙে ফেলে। যাতায়াতের সুবিধার্থে সেখানে কংক্রিটের কালভার্ট করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তাই অস্থায়ী ভাবে কাঠের সেতুর পাশে খালের মধ্যে বালির বস্তা বিছিয়ে দিয়ে আপদকালীন গাড়ি এবং মানুষ পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়। বস্তা দেওয়ায় খাল মজে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্থানীয় বাজার কমিটি এবং বাসিন্দাদের একাংশের পক্ষ থেকে গোমতীর উপর কংক্রিটের লম্বা সেতুর দাবি তোলা হয়। রাস্তার দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার তা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়। এমনকী, সেতুর জন্য আনা সরঞ্জাম রাতারাতি বিক্রি করে এলাকা ছাড়ে। ফলে বালির বস্তার উপর দিয়েই বাসিন্দাদের চলাচল করতে হচ্ছে। একই ভাবে চলছে গাড়ি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোমতী নদীর উপর সেতু হলে সুবিধা হবে যোগেশগঞ্জ-সহ সামসেরনগর, কালীতলা, হেমনগর-সহ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, আজও বড় নদী হয়ে গোমতী দিয়ে গোপালবাবুর ঘাট পর্যন্ত মালপত্রের নৌকা চলাচল করে। জোয়ারে নদীর জল বাড়লে বাজারের মধ্যে জল ঢুকে যায়। সে জন্য কালভার্ট নয়, গোমতী সংস্কার করে লম্বা সেতু করার দাবি ওঠে। ব্যবসায়ীরা জানান, সংস্কার করা হলে একাধারে মজে যাওয়া নদী জীবন ফিরে পাবে। অন্য দিকে নদী চওড়া হলে নৌকা ঢুকতে পারলে বাজারের মালপত্র নিয়ে আসার সুবিধা হবে ব্যবসায়ীদের। যোগেশগঞ্জ বাজার কমিটির পক্ষে হারানন্দ মণ্ডল বলেন, “নির্দিষ্ট মাপে সেতু না-করায় মানুষ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। সেতু না হওয়ার জন্য বড় রকম অসুবিধা হচ্ছে। মালপত্র নিয়ে যেতে গেলে গাড়ি উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।”
সুন্দরবন ট্রেকার ইউনিয়নের প্রাক্তন সম্পাদক প্রভাস নস্কর বলেন, “সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের অন্যতম উপায় নৌকা এবং লঞ্চ। এ জন্য নদী-খাল অপরিহার্য। প্রতিদিন এখানকার কয়েক হাজার মানুষকে খালের বালির বস্তার উপর দিয়ে চলাচল করতে হয়। একই ভাবে ট্রেকার, অটো রিকশা, ভ্যান রিকশা, সাইকেল মোটর সাইকেল সব চলে। সে কারণে আমরা সেতু চাই।”
মহকুমা পূর্ত ও সড়ক দফতর সূত্রে জানা গেছে, আয়লার পরে যোগেশগঞ্জে কাঠের সেতুর পরিবর্তে কালভার্টের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের দাবি লম্বা সেতু করতে হবে। তা করা সম্ভব নয় বলা হলে ঠিকাদারের লোকজনদের মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি নিয়ে বেশ কয়েক বার আলোচনাতেও কোনও সুরাহা হয়নি।
যোগেশগঞ্জ পঞ্চায়েতের প্রধান মুরারীমোহন মণ্ডল বলেন, “কালভার্টের লম্বা ও চওড়া করা নিয়ে দু’পক্ষের মতভেদের জন্য কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেক আলোচনার পর একটা ঐকমত্যে পৌঁছনো গেছে। সেই মতো লিখিত ভাবে পূর্ত ও সড়ক দফতরকে জানানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে।”
বসিরহাটের মহকুমাশাসক অনামিকা মজুমদার বলেন, “স্থানীয় কিছু বাধা কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।” আলোচনার মাধ্যমে কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.