বিষমদে ১৭২ জনের মৃত্যুর পরে যথারীতি রাজ্য জুড়ে চোলাইয়ের ভাটি, ঠেক ভাঙতে উঠেপড়ে নেমেছে পুলিশ-প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে ‘বিকল্প পেশা’র ব্যবস্থা করলে চোলাইয়ের কারবার ছেড়ে আসার কথাও বলতে শুরু করেছেন অনেকে। |
উত্তর ২৪ পরগনায় বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে বৃহস্পতিবার চোলাইয়ের ভাটি উচ্ছেদে অভিযানে নামে পুলিশ-প্রশাসন ও আবগারি দফতর। হাড়োয়ার সোনাপুকুর, চাতরা, বসিরহাটের খোলাপোতা, চক ফারসাতপুরে একাধিক ভাটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আবগারি দফতরের জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্ট সমর স্বর্ণকার বলেন, “জীবনহানির মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা নিয়ে চোলাই পুরোপুরি বন্ধ করতে অভিযান শুরু হয়েছে। জেলায় ইতিমধ্যেই ২১৬টি ভাটি ভাঙা হয়েছে। নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ৭৫ হাজার লিটার চোলাই। গত কয়েক দিনে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” ১৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।”
কিন্তু এত সবের পরেও বেআইনি এই কারবার কি পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে, তা নিয়ে সন্দিহান স্থানীয় মানুষ। কিন্তু আপাতত পেশা হারিয়ে রুটি-রুজির নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটছে এই ব্যবসায় জড়িত অনেকের। চক ফারাসাত গ্রামের দীনেশ মণ্ডল, উজ্জ্বল মণ্ডলদের বক্তব্য, এখানে বহু ছেলেমেয়ে পড়াশোনা শিখেও চাকরি-বাকরি পায়নি। গ্রামে দীর্ঘ দিনের ব্যবসায় ঢুকে গিয়েছে। রাজ্য সরকার যে ভাবে বিষমদে মৃতদের পাশে দাঁড়িয়েছে, সে ভাবে চোলাই কারবারে যুক্ত মানুষের পাশে দাঁড়ালে অনেকেই এই কাজ ছেড়ে দেবে।” কয়েক জন বয়স্ক মানুষের কথায়, “এই গ্রামে চোলাইয়ের কারবার হয় বলে অনেকেই এখন জেনে গিয়েছে। বাইরের এলাকার লোকের সঙ্গে গ্রামের বহু ছেলে-মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ বাতিল হয়েছে এ কারণে।” কল্পনা মণ্ডল, কাকলি মণ্ডলেরা বলেন, “মদের ব্যবসা করে ঘরে অশান্তি পুষে রাখতে কেউ চায় না। বিকল্প রুজির ব্যবস্থা থাকলে কাজ ছেড়ে দিতাম।” |