বেসরকারি বাস ধর্মঘটে বৃহস্পতিবার কাযর্ত বন্ধের চেহারা নিল মুর্শিদাবাদ।
এ জেলায় যাত্রীবাহী বেসরকারি বাসের সংখ্যা প্রায় ৮০০টি। এ দিন অবশ্য পথে ছিল না একটিও বাস। চলেছে কেবল হাতে গোনা কয়েকটি বেসরকারি বাস। ফলে ব্যবসা-বানিজ্য থেকে অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজ সব স্তরেই ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। আজ শুক্রবারও মুর্শিদাবাদ জেলায় বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধই থাকছে।
চালক ও কন্ডাকটারদের নিরাপত্তা এবং লছিমনের মতো ‘অবৈধ’ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা-সহ পাঁচ দফা দাবিতে ওই ধমর্ঘটের ডাক দেওয়া হয়। এ জেলার বাস মালিকদের সব কটি সমিতি নিয়ে গঠিত ‘মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স কাউন্সিল’ এবং বাসের সব ক’টি শ্রমিক সংগঠন নিয়ে গঠিত জেলা মোটর শ্রমিক সমন্বয় কমিটি’র পক্ষ থেকে সম্মিলিত ভাবে ওই ধমর্ঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। |
বুধবার বাস মালিক সমিতি ও বাস শ্রমিক সমিতির সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বৈঠক হয়। তবে তাতেও ধর্মঘট প্রত্যাহার কোনও দুয়ার খোলেনি। ফলে বন্ধের চেহারা নেওয়া জেলায় সামান্য কয়েকটি সরকারি বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে যাত্রীদের। পরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ায় তার প্রভাব পড়ছে ব্যবসা-বানিজ্যেও। চেম্বার অব কমার্সের মুর্শিদাবাদ শাখার সভাপতি অজয়কুমার সিংহ বলেন, “জেলার পরিবহন ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হল বেসরকারি বাস। তা না চলায় ব্যবসা-বানিজ্যে স্বাভাবিক নিয়মেই তার খারাপ প্রভাব পড়েছে। লছিমন-সহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন চলাচলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। প্রশসাসনের উচিৎ বাসের মালিক পক্ষ ও শ্রমিক সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বাস চালানোর ব্যবস্থা করা।”
গত বুধবার মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নিরঞ্জন কুমারের সঙ্গে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। নিরঞ্জনবাবু বলেন, “বাস ধর্মঘটের ফলে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বাসের কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে ও অবৈধ ভাবে যাত্রী বহন বন্ধ করার জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। ওই সব বিষয়ে আরো কড়া ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের আর দিন পনেরো সময় লাগবে। ওই দিনের বৈঠকে ওই সময়টুকু চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁরা ওই সময় না দিয়ে লাগাতার ধর্মঘট শুরু করে দিলেন।”
মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স কাউন্সিলের সম্পাদক তপনকুমার অধিকারী ও মুর্শিদাবাদ জেলা মোটর শ্রমিক সমন্বয় কমিটির পক্ষে জয়দেব মণ্ডল বলেন, “বাসের যাবতীয় যন্ত্রাংশ ও জ্বালানির দাম কয়েক গুন বাড়লেও কয়েক বছরে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। অথচ ওই কম ভাড়া চাওয়ার জন্যও যাত্রীদের কাছ থেকে জুটছে প্রহার। ওই সব ঘটনার দু’ একটি ক্ষেত্র ছাড়া বাকি সব ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া চলছে ২০০২ সাল থেকে, এমনই অভিযোগ। প্রায় এক দশক ধরে প্রতিশ্রুতি ছাড়া অন্য কিছু মেলেনি। |