|
|
|
|
বাজারে দাম নেই, ধান পুড়িয়ে বিক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
খোলাবাজারে ধানের দাম নেই। সহায়ক মূল্যেও সে ভাবে ধান কেনা হচ্ছে না। অথচ, এ বার ফলন বেশি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অভাবি বিক্রি শুরু হয়েছে। চাষিদের বক্তব্য, এখন উৎপাদন খরচ যেখানে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল, সেখানে খোলাবাজারে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এই পরিণতি কেন হচ্ছেসরকারের কাছে তারই জবাবদিহি চেয়ে বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখাল ‘সারা ভারত কৃষক ও খেতমজুর সংগঠন’। জেলার দাঁতন, কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়, সবং-সহ বিভিন্ন ব্লকে বিক্ষোভ হয়। মেদিনীপুরে জেলাশাসকের দফতর সংলগ্ন কালেক্টরেট মোড়েও ধান পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সংগঠনের জেলা নেতা সূর্য প্রধান বলেন, “কৃষক ও খেতমজুরদের জীবন ও জীবিকা এখন চরম সঙ্কটে। সার, বীজ, কীটনাশক, বিদ্যুতের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অথচ, কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে প্রশাসন উদাসীন।” |
|
মেদিনীপুরে কালেক্টরেটের মোড়ে বিক্ষোভ। ছবি: রামরামপ্রসাদ সাউ। |
গোটা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরেও সহায়কমূল্যে ধান কেনার ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু, এই প্রক্রিয়ায় তেমন গতি নেই বলেই অভিযোগ। ফলে, চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। জেলায় এ বার সহায়কমূল্যে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট হয়েছে মাত্রই ১৮০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত ধান কেনা হয়েছে মোটে ১৪ হাজার মেট্রিক টন! ফলে, সমস্যা আরও জটিল হচ্ছে। বাড়ছে অভাবি বিক্রি। জেলায় সাধারণত ৪ লক্ষ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। এ বার চাষ বেড়েছে। সব মিলিয়ে ৫ লক্ষ ৩২৭ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এর ফলে, প্রায় ১৯ লক্ষ ১ হাজার ২৪২ টন ধান উৎপাদন হবে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর। চাষিদের আশঙ্কা, সহায়কমূল্যে ধান কেনায় গতি না-এলে খোলাবাজারে ধানের দাম আরও পড়বে। বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিডিওদের হাতে স্মারকলিপিও তুলে দেওয়া হয়। যেখানে ধানের সহায়ক-দাম কুইন্টাল প্রতি ন্যূনতম ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা করার দাবি জানানো হয়েছে। মেদিনীপুরে কালেক্টরেট মোড়ে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন বলরাম দাস, প্রদীপ দাস, প্রভঞ্জন জানা, স্বদেশ পড়্যা প্রমুখ। বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা শহরে এসে আন্দোলনে সামিল হন। রাস্তার উপর ধান পোড়ানোর জেরে বেশ কিছুক্ষণ স্বাভাবিক যান চলাচলও ব্যাহত হয়। সূর্যবাবু বলেন, “গ্রামে কাজ নেই। বেকারের মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য মূল্য না-পেলে অবস্থা আরও জটিল হবে। সরকারের উচিত, অবিলম্বে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা।” |
|
|
|
|
|