আবগারি-ভূমিকায় অনাস্থা, অভিযানে ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন
ভাঙা হল ৫০টি মদের ভাটি, গ্রেফতার ১৪
বগারি দফতর পারেনি। করে দেখাল ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন। আবগারি দফতরকে বাদ দিয়ে চোলাই-বিরোধী অভিযানে মাত্র এক দিনে গ্রেফতার হল ১৪ জন। মদের ভাঁটি ভাঙা হল ৫০টি।
শুধু তাই নয়, বেআইনি চোলাই ও নকল মদের বিরুদ্ধে তল্লাশি চালাতে একটি কমিটিও গঠন করেছেন ঘাটালের মহকুমাশাসক। যাতে সাধারণ প্রশাসন, পুলিশের প্রতিনিধি, পুরপ্রধানরা তো রয়েছেনই, যুক্ত করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ক্লাবকেও। কিন্তু আবগারি দফতরকে রাখা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই আবগারি দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দফতরের এক শ্রেণির কর্মী ও অফিসারের সঙ্গে ওই সব অবৈধ কারবারিদের যোগসাজশ রয়েছে। তার জেরেই রমরমিয়ে চলছে অবৈধ কারবার। এমনকী আবগারি দফতরের তল্লাশিতে এক জনও গ্রেফতারও হত না!
মগরাহাটে বিষমদে এত মানুষের মৃত্যুর পরেও আবগারি দফতরের এই উদাসীনতায় চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সর্বত্রই। আবগারি দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যানই বলছে, ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে টানা চার দিন ‘তল্লাশি’ চালিয়েও এক জনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি তারা। অন্যদিকে পুলিশ চার দিনের তল্লাশিতে ধরেছে ৫১ জনকে। ঘাটাল মহকুমা প্রশাসনও বুধবারের তল্লাশিতে ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। ৫০টি ভাটি ভেঙে কয়েক হাজার লিটার মদ নষ্ট করেছে। অথচ, যে আবগারি দফতরের বেআইনি মদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর কথা, সেই দফতরের টনক নড়ছে না। অভিযোগ, চোলাই-নকল মদের কারবারিদের সঙ্গে আবগারি আধিকারিকদের একাংশের বিশেষ ‘সম্পর্ক’ রয়েছে। তাই তল্লাশিতে যাওয়ার আগেই আবগারি দফতর থেকেই খবর পৌঁছে যেত কারবারিদের কাছে। তারা গা ঢাকা দিত। আর আবগারি দফতর লোক দেখানো ‘তল্লাশি’ চালিয়ে ফিরে যেত। না হত এক জনও গ্রেফতার, না থামত বেআইনি কারবার।
কারবারিদের কাছে যাতে তল্লাশির খবর আগেভাগে না পৌঁছয়, সে জন্যই ওই দফতরকে বাদ দিয়েই কমিটি তৈরি করা হয়েছে ঘাটাল মহকুমায়। যদিও মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী আবগারি দফতরের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “আবগারি দফতর তাদের মতো কাজ করছে। আমরাও আলাদা ভাবে তল্লাশি চালাচ্ছি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য, সমস্ত বেআইনি চোলাই ও নকল মদ উদ্ধার করা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।”
বুধবার ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় প্রশাসন। তার মধ্যে রয়েছে ঘাটাল শহরের হাসপাতাল মোড়, কলেজ মোড়, বিদ্যাসাগর স্কুলমাঠ, বরদা চৌকান, খড়ার পুর-এলাকা, দাসপুরের গৌরা, রাজনগর, চন্দ্রকোনার বিভিন্ন এলাকা। প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। তল্লাশির পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে জাননো হয়, তাঁরাও যেন প্রশাসনকে সাহায্য করেন। কোথাও বেআইনি মদের কারবারের খবর পেলেই যেন প্রশাসনকে জানান। এমনকী বিভিন্ন ক্লাবকেও এ বিষয়ে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনিক কর্তাদের ব্যাখ্যা, শুধু মদ নষ্ট বা অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াই নয়, সাধারণ মানুষকে সজাগ করতে পারলেই আসল কাজ হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি হলেই এই ধরনের অবৈধ ব্যবসা কমবে। কারণ, কেউ নতুন করে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করলেই স্থানীয় মানুষই প্রশাসনকে জানিয়ে দেবেন। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষও। ঘাটালের পুরপ্রধান জগন্নাথ গোস্বামী বলেন, “এই ধরনের অনৈতিক কাজকর্ম অনেক আগেই বন্ধ হওয়া উচিত ছিল। আবগারি দফতরের উদাসীনতাতেই তা হচ্ছিল না। এ বার মহকুমা প্রশাসন যে ভাবে উদ্যোগী হয়েছে তা প্রশংসনীয়।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.