|
|
|
|
শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে বাধা, অভিযুক্ত তৃণমূল |
পীযূষ নন্দী • আরামবাগ |
তৃণমূলের ‘হামলা’য় শাশুড়ির শ্রাদ্ধানুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যেতে বসেছে বলে অভিযোগ করলেন সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধান। এ জন্য মহকুমাশাসকের কাছে ‘বিহিত’ চেয়েছেন তিনি। তৃণমূল বিধায়কেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। আরামবাগ মহকুমার আরান্ডি ২ পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান সুলেখা পালের বাড়ি স্থানীয় রায়পুর গ্রামে। প্রায় এক মাস আগে মারা গিয়েছেন তাঁর শাশুড়ি। সুলেখাদেবীর স্বামী সুনীতবাবু সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কমিটির সদস্য। দুই তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় অভিযোগ থাকায় গত ২৩ মে সুনীতবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। পুলিশ জানায়, আদালতের নির্দেশে তিনি আপাতত মহকুমায় ঢুকতে পারবেন না। মায়ের মৃত্যুর দিনেও আসতে পারেননি সুনীতবাবু। তাঁর ভাই পার্থ পাল পারলৌকিক ক্রিয়া করেন। দাদার অনুপস্থিতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করার কথা তাঁরই।
সুলেখাদেবীর অভিযোগ, বাড়িতে একাধিক বার হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। শাশুড়ির মৃত্যুর পরে তাঁরা মনে করেছিলেন, ‘হামলা’ এ বার কমবে। যে কারণে দশ দিনের মাথায় শ্রাদ্ধানুষ্ঠান না করে তাঁরা এক মাস পরে অনুষ্ঠান করবেন বলে ঠিক করেন। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত সেই কাজ হওয়ার কথা। প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল। সুলেখাদেবী বলেন, “মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতা সোরাব হোসেন এবং রাজু খানের নেতৃত্বে এক দল লোক বাড়িতে বোমাবাজি করে। আমাদের অশ্রাব্য গালিগালাজ করা হয়। প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় তৃণমূলের লোকজন। আমার দেওর রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। কিন্তু স্বামী বা দেওর কেউ-ই যেন শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে না থাকেন, সে জন্য শাসিয়ে যায় ওরা। আমরা পুলিশে খবর দিই।” সুলেখাদেবীর অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে পর দিন থেকে পার্থবাবুকে ‘খোঁজাখুঁজি’ শুরু করে। তাঁর বিরুদ্ধে বালি চুরি, হামলা প্রভৃতি নানা মিথ্যা অভিযোগ করা হয় বলে দাবি সুলেখাদেবীর। প্রধান বলেন, “এই পরিস্থিতিতে শ্রাদ্ধের কাজ কী ভাবে হবে, জানি না।”
ঘটনার কথা আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীকে লিখিত জানিয়েছেন সুলেখাদেবী। অরিন্দমবাবু বলেন, “পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি, যাতে অনুষ্ঠানের কাজে কোনও অসুবিধা না হয়।”
পুলিশের মদতেই তৃণমূলের লোকজন হুমকি দিচ্ছে বলে সুলেখাদেবীর অভিযোগ। ঘটনাটি আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরাকেও জানিয়েছেন তিনি। বিধায়ক বলেন, “বিষয়টি জেনেছি। আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করলে দল-মত নির্বিশেষে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” এসডিপিও আকাশ মাগারিয়ার বক্তব্য, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” সুনীতবাবু মায়ের কাজে আসতে চেয়ে প্রশাসন বা পুলিশের কাছে আবেদন করেননি বলে মহকুমা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পার্থবাবু টেলিফোনে বলেন, “তৃণমূলের হামলা থেকে রেহাই পেতে চাই। অন্তত মায়ের কাজটা যাতে সুষ্ঠু ভাবে করতে পারি, সেই ব্যবস্থা করুক পুলিশ। কাজের শেষে না হয় আমাকে গ্রেফতার করবে।” ঘটনায় অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতা সোরাব ও রাজুর বক্তব্য, “আমাদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ তুলছেন প্রধান। পাড়াগত কোনও সমস্যায় দলকে জড়ানো হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|