এতদিন স্কুলবাড়ি, পঞ্চায়েত ভবন বা মোবাইল টাওয়ার ওড়াচ্ছিল মাওবাদীরা। এ বার বিহারের অরারিয়ার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে খুনের হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠাল তারা। আজ সকালে রেজিস্টার্ড পোস্টে চিঠি দু’টি আসে। প্রেরক মাওবাদীদের এরিয়া কম্যান্ডার কৃষ্ণা যাদব। ওই চিঠিতে মাওবাদীরা অরারিয়া জেলে সংগঠনের যে সব কর্মী বন্দি আছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে। না হলে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তারা।
২০০৫ সালে মুঙ্গেরের তদানীন্তন পুলিশ সুপারকেও অনুরূপ হুমকি দিয়েছিল মাওবাদীরা। পরবর্তীকালে ওই পুলিশ সুপার কে সি সুরেন্দ্রবাবুর গাড়ি তারা ল্যান্ডমাইন দিয়ে উড়িয়ে দেয়। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তাঁর। ২০১১ সালে ফের একই ধরনের হুমকির জেরে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জেলাশাসক এম সর্বনান বলেন, “আজ সকালে রেজিস্টার্ড পোস্টে মাওবাদীদের একটি চিঠি পেয়েছি। তাতে কী লেখা আছে দেখিনি। পুলিশ সুপারের কাছে চিঠিটি পাঠিয়ে দিয়েছি। পুলিশ এই ব্যাপারে তদন্ত করবে।” চিঠি পেয়েছেন পটনা থেকে অরারিয়ায় বদলি হয়ে আসা দাপুটে পুলিশ সুপার শিবদীপ ল্যান্ডেও। তিনি বলেন, “আমরা তদন্ত করছি। চিঠিটিতে লক্ষ্মীসরাই ডাকঘরের ছাপ। অরারিয়া জেলে এখন রয়েছে ৬০০ বন্দি। এর মধ্যে কতজন মাওবাদী, তা আমাদের জানা নেই। দেখতে হবে কোন্ বন্দি কী কারণে জেলে আছে।” চিঠিতে মাওবাদীরা তাদের বন্দিদের সংখ্যা উল্লেখ করেনি। প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, গত বছর ল্যান্ডে কর্মসুত্রে মুঙ্গের জেলার জামালপুরে ছিলেন। সেই সময় তিনি একেবারেই নতুন। মুঙ্গের মাওবাদী প্রভাবিত জেলা। ল্যান্ডের কার্যকালে মাওবাদী-গ্রামবাসী সংঘর্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এই পুলিশ সুপার সেই সময় মাওবাদী এলাকার বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়েছিলেন। এর পর ডাকাবুকো এই অফিসার পুলিশ সুপার (সেন্ট্রাল) হিসাবে আসেন পটনায়। এসেই জাল ওষুধ এবং প্রসাধনী সামগ্রী তৈরির বেশ কয়েকটি কারখানা বাজেয়াপ্ত করেন তিনি। শহরে ট্রাফিকের দায়িত্ব থাকায় তিনি ত্রাস হয়ে ওঠেন আইন ভাঙতে অভ্যস্ত গাড়ি ও এটোচালকদের। জনতার চোখে তিনি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে ল্যান্ডেকে অরারিয়ায় বদির প্রতিবাদ জানান পটনাবাসী। গত মাসে আরারিয়ার পুলিশ সুপার হিসেবে ল্যান্ডেকে পাঠানো হয়। জেলাটি মাওবাদী প্রভাবিত এবং নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ার কারণে সেখানে অপরাধমূলক কাজ বেশি হয়। এই জেলার দায়িত্ব নেওয়ার পরে তিন দিন আগে ওই পুলিশ সুপার গিয়েছিলেন নেপাল সীমান্ত এলাকা ঘুর্ণি এবং বাসমতিয়া থানায়। কিছুটা দূরে নেপালের সুনসেরি জেলা। সেখানে নেপালের মাওবাদীদের একটি শিবির আছে। |