তাঁর দলনেত্রী যাত্রীভাড়া বাড়ানোর বিরোধী। তাই ভাড়া বাড়িয়ে বাড়তি আয়ের সংস্থান করা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে জমে থাকা প্রকল্প শেষ করতে অর্থ মন্ত্রকের কাছে বাড়তি টাকা চেয়েছিল তাঁর মন্ত্রক। সেই আবেদন খারিজ হয়ে গেলেও ফের টাকা চেয়ে এ বার খোদ প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী।
সমীক্ষা বলছে, প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর ধরে বহু রেল-প্রকল্প অর্থাভাবে শেষ করা যায়নি। কাজ সময়ে না-হওয়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে খরচ বেড়েছে। উপরন্তু ফি বছর নতুন নতুন প্রকল্প ঘোষিত হয়েছে। আজ রাজ্যসভায় অতিরিক্ত ব্যয়বরাদ্দ সংক্রান্ত বিতর্কের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, “জমে থাকা প্রকল্প শেষ করতে ৫,৬০,৩৯৬ কোটি টাকা দরকার। অথচ রেলের হাতে বাড়তি অর্থ নেই। তাই প্রধানমন্ত্রীর মুখাপেক্ষী হতেই হবে।” মাস দেড়েক আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকার সাহায্য চেয়ে রেলকে নিরাশ হতে হয়েছে। অগত্যা এখন রেলমন্ত্রীর ভরসা প্রধানমন্ত্রীই।
আজকের বিতর্কে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ সাংসদ অবশ্য রেলের যাত্রী-ভাড়া বৃদ্ধির পক্ষেই সওয়াল করেন। কিন্তু এই প্রস্তাবে তাঁর নিজের দল, অর্থাৎ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের আপত্তি থাকায় জবাবি ভাষণে প্রসঙ্গটি কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন দীনেশ। নজরে পড়ার মতো ঘটনা হল, ঘণ্টা পাঁচেক ধরে বিভিন্ন দলের ত্রিশ জন সাংসদ বলার পরে রেলমন্ত্রী যখন জবাব দিতে ওঠেন, তখন রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সব সদস্য হাজির থাকলেও তৃণমূলের আসন ছিল একেবারে খালি। যা দেখে কংগ্রেসের সাংসদেরাও অবাক হয়ে যান।
আজকের বিতর্কে রেলের সুরক্ষা ও যাত্রী-পরিষেবার সার্বিক উন্নতির উপরেও জোর দিয়েছেন অধিকাংশ বক্তা। সিপিএমের প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের যেমন অভিযোগ, রেল পুলিশ-সহ চতুর্থ শ্রেণির বহু পদ খালি থাকায় রেলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। পরে দীনেশ আশ্বাস দেন, “ভর্তি প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। খুব দ্রুত শূন্য পদে লোক নিয়োগ করা সম্ভব হবে।”
গুজরাতে ছ’টি প্রকল্প শেষ করতে রেল আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ স্মৃতি ইরানি। বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়ে দীনেশ বলেন, “আমার পাঁচ-ছ’মাসের মন্ত্রিত্বকালে সাংসদেরা প্রায় তিন হাজার নতুন প্রকল্পের আবেদন জানিয়েছেন। নতুন লাইনের আবেদন পড়েছে প্রায় ২০২টি!” |