ভোট এগিয়ে এনে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন নির্ঘণ্ট যে কোনও সময়ে ঘোষণা করে দিতে পারে নির্বাচন কমিশন। ঠিক তার আগে, সরকারি চাকরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণের আওতায় সংখ্যালঘুদের জন্য সাড়ে চার শতাংশ সংরক্ষণের প্রস্তাবে আজ অনুমোদন দিয়ে দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, এই সিদ্ধান্তে মোহর লাগাতে সংসদে যেতে হবে না। প্রশাসনিক নির্দেশের মাধ্যমে বুধবার থেকেই তা কার্যকর হয়ে যাবে।
সরকারি চাকরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) জন্য ২৭% সংরক্ষণ রয়েছে। তার আওতাতেই সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণ দেওয়া হবে। রাজনৈতিক সূত্রে বলা হচ্ছে, সংবিধান অনুযায়ী ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণের জন্য তাঁদের অনগ্রসরতার যুক্তি দিয়ে এই পথে হাঁটল সরকার। তবে এই নীতি নিয়ে এর পরেও সর্বোচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঠিক যেমন লোকপালের সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু সংরক্ষণ বিতর্কও শেষ পর্যন্ত আদালতের ফেরে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘুদের মধ্যে কংগ্রেসের জনভিত্তি বাড়াতে চাইছেন সনিয়া-রাহুল। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত উত্তরপ্রদেশে বড়সড় প্রভাব ফেলবে বলেই আশাবাদী কংগ্রেস। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, গত লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ মুলায়ম সিংহের সঙ্গ ত্যাগ করে কংগ্রেসের অনুকূলে ভোট দিয়েছিল। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত তাতে আরও অক্সিজেন দেবে। তা ছাড়া এই সিদ্ধান্তে সপা নেতা মুলায়ম সিংহও চাপে পড়লেন। মুসলিম ও যাদবরা মুলায়মের প্রধান জনভিত্তি। যাদবরা বর্তমানে ওবিসি-র আওতায় সংরক্ষণের সুবিধা পায়। তাঁদের কোটায় সংখ্যালঘুরা ভাগ বসালে যাদবদের অসন্তুষ্ট হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কিন্তু তাঁদের সহানুভূতি দেখাতে গেলে মুলায়মের সংখ্যালঘু ভোট হাতছাড়া হতে পারে।
গত লোকসভা ভোটের ইস্তেহারেই সংখ্যালঘু সংরক্ষণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু অনেক কংগ্রেসি রাজ্য সেই পথে হাঁটলেও জাতীয় স্তরে সেই নীতি গ্রহণের জন্য কৌশলগত ভাবে সময় নিচ্ছিল সরকার। তার পর ঠিক ভোটের মুখে আজ সেই সিদ্ধান্ত নিল মনমোহন মন্ত্রিসভা।
নির্বাচন কমিশন আজই জানিয়েছে যে পাঁচ রাজ্যের ভোটে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে কাল দুপুরে স্বরাষ্ট্রসচিব রাজকুমার সিংহের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হবে। তার আগে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেসের কর্তাদের সঙ্গে ভোটে প্রার্থীদের খরচের হিসাবের ওপর নজর রাখার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রের খবর, হয়তো আগামী সপ্তাহেই পাঁচ রাজ্যের ভোট নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হবে। |