কেনা জমিতে বেড়া দিতে বলল প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
প্রশাসনিক বৈঠক হল ঠিকই। তবে দুবরাজপুরের লোবা অঞ্চলে প্রস্তাবিত খোলামুখ কয়লা খনির জমি-জট কাটার লক্ষ্মণ তাতে কেটে গেল, এমন বলা যাচ্ছে না। খনি নির্মাণকারী সংস্থা ডিভিসি-এমটার যে মাটি কাটা যন্ত্র সোমবার বিকেল থেকে আটকে রেখেছিলেন এলাকাবাসীদের একাংশ এবং স্থানীয় কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যেরা, এ দিনও তা ছাড়া হয়নি।
জমি কেনা নিয়ে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা মেটাতে বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিভিসি-এমটা এবং কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যদের নিয়ে সিউড়িতে নিজের দফতরে বেঠক করেন মহকুমাশাসক (সিউড়ি সদর) সুজয় আচার্য। বিকেল ৪টে থেকে ৬টা পর্যন্ত চলা বৈঠকের শেষে মহকুমাশাসক বলেন, “দু’পক্ষের কথা শোনা হয়েছে। উভয় পক্ষকেই বলা হয়েছে, আইন নিজেদের হাতে না নিতে। দু’পক্ষের দাবি ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হবে।” |
সিউড়িতে বৈঠক। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। |
এ দিনের বৈঠক শেষে নির্মাণকারী সংস্থার জয়দেব-খাগড়া প্রকল্পের আধিকারিক পূর্ণচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “এখনও পর্যন্ত যে সব জমি কেনা হয়েছে, আপাতত সেগুলি বেড়া দিয়ে কাজ শুরু করতে বলেছেন মহকুমাশাসক।” কৃষিজমি রক্ষা কমিটির পক্ষে জয়দীপ মজুমদার বলেন, “এটা স্থানীয় মানুষের আবেগের ব্যাপার। তবু মহকুমাশাসকের নির্দেশ মতো যন্ত্র ছেড়ে দেওয়ার জন্য মানুষকে বোঝাব। পাশাপাশি প্রশাসন যেন আমাদের দাবিগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়।”
প্রসঙ্গত, পিপিপি ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই সংস্থার বিরুদ্ধে এলাকার কৃষিজমি কেনাকে ঘিরে একাধিক অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ এবং কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা একটি মাটি কাটার যন্ত্র আটকে রেখেছেন সোমবার থেকে। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েও ওই যন্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। এই নিয়ে দু’পক্ষ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল।
বীরভূমের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার নির্দেশ মতো উদ্ভুত সমস্যার সমাধানসূত্র বের করতে এ দিন বৈঠক ডাকেন মহকুমাশাসক। যাঁরা মাটি কাটার যন্ত্র আটকে রেখেছেন, তাঁদের অভিযোগ, লোবা অঞ্চলের ১০টি মৌজার মোট ৩,৩৫৩ একর জমি কেনার কথা ছিল ওই সংস্থার। কথা ছিল সমস্ত জমি এক সঙ্গে কিনে এবং উপযুক্ত পুনর্বাসন দেওয়ার পরে খনির কাজ শুরু হবে। কিন্তু সেটা না করে এলাকার মানুষকে অন্ধকারে রেখে বিক্ষিপ্ত ভাবে মধ্যস্থতাকারী মারফত জমি কিনে খনন কাজ শুরু করতে চাইছে ওই সংস্থা। এর প্রতিবাদেই ওই যন্ত্র আটক করা হয়েছে। যদিও কৃষিজমি রক্ষা কমিটি এবং এলাকার কৃষিজীবীদের একাংশের এই অভিযোগ মানতে নারাজ ওই সংস্থা। তাদের দাবি, জেলাশাসক, সংস্থার আধিকারিক, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, এলাকাবাসী ও পঞ্চায়েত প্রধানকে নিয়ে জমির দাম ও পুনর্বাসনের প্যাকেজ ঘোষণা করেই জমি কেনা শুরু হয়েছে। মধ্যস্থতাকারী মারফত জমি কেনার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। |