চকচকে তক-ত্বকে
কজিমা একটি সাধারণ চর্মরোগ। যে কোনও বয়সে, শিশু থেকে বয়স্ক পর্যন্ত এটি দেখা যায়। এর আর একটি নাম অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস।
একটি বাচ্চার জীবনে প্রথম বছরেই এই অ্যাটাকটি হয়ে যায়। এই সময়ে ত্বকে শুকনো শুকনো চামড়া ওঠা ছোপ দেখা যায়। এটি দেখা যায় স্ক্যাল্প, কপাল ও মুখে। শুধু মাত্র বাচ্চাদের দুই গালে এটি হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চুলকানি এত বেশি হয়, যে ঘুমের ক্ষতি হয় এবং ত্বকের অন্য সংক্রমণও হতে পারে। এই একজিমা খুব তাড়াতাড়ি যাওয়ার নয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ঠিক ত্বকচর্চাটি (অন্তত এই সময়) সম্বন্ধে জানা উচিত। কারণ একটি বাচ্চার জন্য ঠিক ত্বকচর্চা এই সময়ই দরকার।
এই একজিমাটি চিনব কী করে?
একেবারে খুদে বাচ্চা (একের নীচে)
• দু-তিন মাস বয়স থেকেই শুরু হতে পারে।
• ত্বক শুকনো হয়ে যাবে। চুলকানি হতে থাকবে এবং চামড়াটি ওঠা ওঠা হয়ে যাবে।
• মাথায় এবং দুই গালেও এটি দেখা যায়।
• ছোট ছোট ফোস্কার মতো হয় এবং এর থেকে রস বের হয়।
• খুবই চুলকোয়।
• বিছানায় গা-পা ঘষতে থাকে, ফলে বাচ্চাদের সহজে ত্বকের সংক্রমণ শুরু হয়ে যায়।
• মা-বাবারা অনেক সময় চিন্তায় থাকেন, তাঁর বাচ্চার ডায়াপার অঞ্চলে বোধ হয় অসুখটি হয়েছে, কিন্তু ৯৯% একজিমা ডায়াপার অঞ্চলে হয় না। দুই বছর থেকে ১৩-১৪ র আগে পর্যন্ত
• কনুই এবং হাঁটুর পিছনে, এক ধরনের র্যাশ দেখা যায়। ঘাড়ের পিছন, কব্জি, গোড়ালি এবং পশ্চাদভাগে দেখা যায়।
• খুবই চুলকানি হয় এবং চুলকানির সঙ্গে চামড়া উঠে আসে। কী কী পরিবর্তন দেখা যায়
• যে অংশে একজিমা হয় সেই অংশের চামড়াটি মোটা হয়ে যায়।
• ত্বকের রং কোনও কোনও ক্ষেত্রে হালকা বা বেশি গাঢ় হতে পারে।
• সব সময় চুলকাবে।

মোটামুটি ভাবে ৯০% ক্ষেত্রে অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস বা একজিমা শৈশবে দেখা যায় আর এর পরের ধাপে দেখা যায় ৫০%। শৈশবের উপসর্গগুলি থাকে অনেক বেশি। প্রাপ্তবয়স্ক হলে তা ধীরে ধীরে কমে যায়।

• ঘাড় ও হাঁটুর পেছনে এবং কনুইয়ে
• শরীরের অনেকটা অংশ জুড়েও হতে পারে
• চোখের চার দিকে অনেক সময় দেখা যায়
• একজিমার জন্য ত্বক শুকনো হয়ে যায়, সঙ্গে খুব চুলকায়
• বাচ্চাদের তুলনায় বড়দের চামড়া ওঠার প্রবণতা বেশি দেখা যায়
• যদি এক জনের অ্যাটোপিক একজিমা বহু বছর থাকে তবে ত্বকের ওই অংশটি কালো ও মোটা হয়ে যায়

• ত্বকটি খুব শুকনো হয়ে যায়
• খুব সংবেদনশীল হয়ে যায়
• পরবর্তী কালে হাতে একজিমা হতে পারে
• বয়সের আগেই চোখে ক্যাটারাক্ট বা ছানি দেখা দিতে পারে

মোটামুটি ভাবে ১০ থেকে ২০ শতাংশ বাচ্চার একজিমা হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই হার ১-৩ %। ৯০% ক্ষেত্রে একজিমা হয় ৫ বছরের আগে। খুব কম ক্ষেত্রেই প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে একজিমা দেখা দেয়
এখন একজিমার হার অনেক বেড়ে গেছে। এ নিয়ে প্রভূত গবেষণা চলছে। কিন্তু ঠিক কারণটি এখনও জানা যায়নি

• বংশগত কারণে
• হাঁপানি থেকেও একজিমা হয়, সেটাও বংশগত
• এক জন শিশুর একজিমা হাঁপানি দুটিই অ্যালার্জিক কারণ থেকে হতে পারে
• শহুরেদের বেশি হয়, ঠান্ডায় বেশি দেখা যায়
• ছোট মেয়েদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে
• মায়ের বেশি বয়সে সন্তান হলে বাচ্চার একজিমা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি
• উচ্চবিত্ত বাচ্চাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় কারণ এরা অনেক বেশি সাবধানে ও সংরক্ষিত অবস্থায় থাকে। সেই কারণে চট করে কোনও ইনজেকশন থেকেও একজিমা হয়ে যায়

• এটি ছোঁয়াচে নয়
• জিনের একটি বড় ভূমিকা থাকে
• খাবার কোনও ভাবেই এ ক্ষেত্রে দায়ী না। তবে কোনও খাবারে অ্যালার্জি থাকলে অ্যাটেপিক একজিমা খুব বাজে ভাবে দেখা দেয়
• অনেক বাচ্চাদের দুধ এবং দুধ জাতীয় খাবার, বাদাম ও সামুদ্রিক খাদ্যে অ্যালার্জি থাকে। তাদের একজিমা হলে এ সব খাবার স্বভাবতই বন্ধ করা উচিত
• মা-বাবা’রা নিজেরা কোনও খাবার বন্ধ করবেন না। ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবেন। না হলে বাচ্চার পুষ্টি অকারণে বন্ধ হয়ে যায়

অ্যাটোপিক একজিমা বারংবার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সম্ভাবনা এড়াতে খেয়াল রাখতে হবে যাতে
• চুলকানি কম হয়
• মানসিক চাপ কম থাকে
• কোনও সংক্রমণ না হয়
• ত্বক যেন মোটা না হয়
চিকিৎসার ক্ষেত্রে অ্যান্টি বায়োটিক, অ্যান্টি অ্যালার্জিক এবং ময়েশ্চারাইজারের অধিক ব্যবহারই এক মাত্র সমাধান। এ ছাড়া এখন ইউভিটি থেরাপিও করা হচ্ছে।

যোগাযোগ: ২৩৫৮ ৮০১০, ৯৪৩৩০ ২৩৮৭৯
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.