শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের যে সব নার্সিংহোমে আগুন নেভানোর সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেই তাদের সতর্ক করে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শুক্রবার বিকেলে শিলিগুড়িতে নার্সিংহোম মালিকদের প্রতিনিধি, পুলিশ-প্রশাসন ও দমকল দফতরের অফিসারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। বৈঠকে মন্ত্রী জানিয়ে দেন, উত্তরবঙ্গের যে সব নার্সিংহোম এখনও আগুন নেভানোর সু,্ঠু বন্দোবস্ত করেনি, তাদের দ্রুত তা করতে হবে। না হলে আগামী দিনে ওই সব নার্সিংহোমের লাইসেন্স নবিকরণ করা হবে না বলে মন্ত্রী জানিয়ে দেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আমরা রাতারাতি কনা পদক্ষেপ করতে চাই না। ফের সময় দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সব নার্সিংহোমকে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে যাতে ওই সব নার্সিংহোমের লাইসেন্স নবিকরণ না-হয়, সে জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে লিখিতভাবে জানানো হবে।” পাশাপাশি, সব ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম রাখা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে ছিলেন দার্জিলিঙের স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসাররাও। মন্ত্রীর পরামর্শ মেনে শীঘ্রই অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম ব্যবহারের প্রশিক্ষণ শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বিশেষজ্ঞরা ওই প্রশিক্ষণ দেবেন। পাশাপাশি, আজ, শনিবার থেকে দমকল, পুলিশ-প্রশাসন একটি সমীক্ষার কাজ শুরু করবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা পড়বে। |
মন্ত্রী বলেন, “কলকাতার দুঃখজনক ঘটনার পর এখনই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। শিলিগুড়ি শহরে সরকারি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজ ছাড়াও বহু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ দমকলের নির্দেশিকা মেনে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা তৈরি করেননি। এদিন সবাইকে তা পরিষ্কার করে দ্রুত ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে। শুধুমাত্র আগুন নেভানোর যন্ত্র নয়। স্মোক আর্লাম, একাধিক সিড়ি ও লিফটের ব্যবস্থা, আপৎকালীন বাইরে যাওয়ার আলাদা রাস্তা এর মধ্যে রয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রশাসনের হাতে এদিন সকাল অবধি শিলিগুড়ি শহরের ২৯টি নার্সিংহোমের তালিকা ছিল। এর মধ্যে ১০টি দমকলের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা করেছে। বাকি ১৯টি দীর্ঘদিন ধরেই কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। শিলিগুড়ি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালও দমকলের নির্দেশ মানেনি। বিকালে বিস্তারিত খতিয়ে দেখার পর সংখ্যাটি দাঁড়ায় ৫৩। এগুলি বেশিরভাগই নতুন নার্সিংহোম এবং বড়মাপের ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শহরে বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয়েছে। এগুলির অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কী রয়েছে তাও দমকল এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের দেখতে বলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। এর পাশাপাশি, নার্সিংহোমগুলির পার্কিংজোন নিয়ে এদিন বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এদিকে, দার্জিলিং পাহাড়ের সব হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন পার্বত্য পরিষদের প্রশাসক অনিল বর্মা। তিনি বলেন, “সব নার্সিংহোম ও হাসপাতালের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ করা জরুরি।” প্রশাসনিক সূত্রেই জানা গিয়েছে, দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন ইতিমধ্যেই এসডিও-দের কাছে হাসপাতাল, নার্সিংহাম-এর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। |