নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
কলেজে শান্তি বজায় রাখতে গেলে বহিরাগতদের কলেজে আসা আটকাতে হবে, এই সিদ্ধান্তেই পৌঁছলেন জেলা প্রশাসন। নির্বাচনের দিন কলেজের ২০০ মিটারের ধারে কাছে কোনও রাজনৈতিক দলেরই নেতাদের উপস্থিতি কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ করা হল।
কলেজ ভোটের প্রস্তুতি পর্বের চূড়ান্ত লগ্নে এই সিদ্ধান্তে খুশি সংশ্লিষ্ট প্রায় সব পক্ষই। প্রায় সব কলেজেই মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার কাজ হয়ে গিয়েছে। সেই সময়েই বেশ কয়েকটি কলেজে দফায় দফায় সংঘর্ষের পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। উদ্বিগ্ন প্রশাসন সেই মতোই শুক্রবার জেলাশাসকের উপস্থিতিতে বিভিন্ন পক্ষকে ডেকে একটি বৈঠকের আয়োজন করে। জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, “বহিরাগতদের আটকাতে পারলেই কলেজে ভোট অনেক শান্তিতে হবে বলে আমাদের মনে হয়। এই দিনের বৈঠকে ৭ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা ১৭ ডিসেম্বর কলেজগুলির ভোটের দিন বলবৎ করা হবে। সেই সব সিদ্ধান্তে সকলেই সমর্থন জানিয়েছেন। আশা করব, এই সিদ্ধান্তগুলি কার্যকর করতে সব দলের নেতাদেরই সমর্থন পাওয়া যাবে।”
এই দিনের বৈঠকে আলোচনায় সামগ্রিক ভাবে খুশি সব রাজনৈতিক দলের নেতারাই। তবে দু’একটি ক্ষেত্রে তাঁদের ক্ষোভও গোপন করেননি তৃণমূল ও সিপিএম নেতারা। বৈঠকে হাজির ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সচ্চিদানন্দ কাণ্ডারী। তিনি বলেন, “বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্তে আমরা সহমত। কিন্তু জেলার দু’টি কলেজে ছাত্র পরিষদ ছাড়া বিরোধী সংগঠনের কোনও প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র দাখিল করতেই দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও ফল হয়নি। জেলাশাসকের কাছে এই প্রসঙ্গ তোলার পরে জেলাশাসক এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি পার্থ পালও বলেন, “অনেক সিদ্ধান্তকে আমরা সমর্থন করেছি। কিন্তু কোনও কোনও কলেজে ভোটার তালিকায় ঠিকানা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা আমরা সমর্থন করি না। ঠিকানা থাকলে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলার দু’টি কলেজে ছাত্র পরিষদ ছাড়া আর কাউকে মনোনয়ন পত্র জমা দিতেই দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। তবে সামগ্রিক ভাবে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।” আরএসপি’র ছাত্র সংগঠনের পিএসইউ-র জেলা সভাপতি আরাফৎ হোসেন বলেন, “প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলির প্রতি সমর্থন রয়েছে আমাদেরও। তবে আমাদের প্রস্তাব, সব কলেজে একই সময়ে ভোট গ্রহণ শুরু ও শেষ করতে হবে।”
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান বলেন, “সিদ্ধান্ত কেবল নিলেই হবে না। তা কার্যকরীও করতে হবে। সেটাই প্রশাসনের দায়িত্ব।” তিনি বলেন, “দু’টি কলেজে অন্যরা কেন মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি, তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। ওই সংগঠনগুলি তাঁদের সমর্থক সংগ্রহ করতে পারেননি, তাই পারেননি।”
কলেজ ভোট • নির্বাচনের দিন কলেজ চত্বরের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। সাইকেল বা অন্য কোনও যানবাহন নিয়ে বহিরাগতেরা প্রবেশ করতে পারবেন না।
• ওই এলাকায় কোনও দলের পোস্টার, ব্যানার টাঙানো যাবে না। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টার, ব্যানার খুলে ফেলতে হবে।
• মহকুমাশাসকের অনুমতি নিয়ে ভোটের সঙ্গে জড়িতরাই কেবল মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
• ব্যাগ বা বোতল নিয়ে কলেজ চত্বরে ঢোকা যাবে না।
• পরিচয়পত্র ছাড়া কলেজে প্রবেশ নিষেধ।
• মানতে হবে কলেজের নিজস্ব নির্বাচন বিধি।
• দলের ‘শিবির’ করতে হবে ২০০ মিটারের বাইরে। সেখানে থাকতে পারবেন কেবল বর্তমান ছাত্রেরা। তাও ৪ জনের বেশি নয়। |