আমরির আঁচে
প্রিয়াঙ্কা আর ফিরবে না বোরাখুলিতে

প্রিয়াঙ্কা রায়
কেমোথেরাপির জন্য কলকাতার আমরিতে আগেও দু’বার ভর্তি করানো হয়েছিল প্রিয়াঙ্কা রায়কে (২২)। ছ’দিন আগে আবারও তাঁকে সেখানে ভর্তি করানোর সময় তাই জলঙ্গি থানার সুজয় রায় ভাবতেও পারেননি এই পরিণতি হবে। বৃহস্পতিবার রাতের আগুনে মারা গিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। তাঁর দাদা মানব দেবনাথ বলেন, “প্রিয়াঙ্কা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন মাস তিনেক আগে। মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে প্রথমে চিকিৎসা হয়। তার পর সেখানকার চিকিৎসকরা বোনকে কেমোথেরাপির পরামর্শ দেন। সেই মতো কলকাতার আমরি হাসপাতালে তার কেমোথেরাপি চলছিল তাঁর।” দিন সাতেক আগে ফের আমরিতে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ইসলামপুর থানার বোরাখুলি গ্রামের মৃৎশিল্পী সাধন দেবনাথের দুই মেয়ের মধ্যে প্রিয়াঙ্কাই বড়। পাড়া-প্রতিবেশীর খুব প্রিয় ছিলেন। সুজয়বাবুর সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার বিয়ে হয় বছর চারেক আগে। সুজয়বাবু তখন স্থানীয় ইসলামপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। তাদের একটি শিশুকন্যাও আছে। তাঁর বাড়ি অবশ্য উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। সাধনবাবু বলেন, “এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ কলকাতা থেকে ফোন করেন আমাদের এক আত্মীয়। ওই ফোন থেকে জানতে পারি আমরি হাসপাতালের বিছানাতেই আমার মেয়ের এই ভাবে মৃত্যু হয়েছে।” দিদির মৃত্যুতে ছোট বোন নবম শ্রেণির ছাত্রীর রিম্পা শোকে পাথর। শোকের সঙ্গে ক্ষোভের আগুনেও ফুসছে বোরাখুলি গ্রাম।

 

হাসনাইনের অপেক্ষায় ঘোলাকান্দি
গত সেপ্টেম্বর থেকে আমরিতে ভর্তি ফরাক্কা থানার ঘোলাকান্দি গ্রামের হাসনাইন শেখ (১৭) আর ফিরবেন না। প্রথম শ্রেণি পেয়ে মাধ্যমিক উর্ত্তীণ হাসনাইন ফরাক্কার নয়নসুখ হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। তারা চার ভাই ও চার বোন। ভাইদের মধ্যে সে সব থেকে ছোট। বাবা বাহারুল শেখ সম্পন্ন কৃষক। হাসনাইনের জ্যেঠতুতো দাদা এমদাদুল শেখ বলেন, “মাথায় ব্যথা হচ্ছিল ওর। সেই কারণে ওকে প্রথমে মালদহে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু সেখানে ভাই-এর রোগ নির্ণয় না করতে পারায় পুজোর আগে গত সেপ্টেম্বরে তাকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে আমরি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভাই-এর ব্রেন টিউমার হয়েছে বলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান। অপারেশন করে ভাইকে সুস্থ করতে দেড় লক্ষ টাকা খরচ পড়বে বলে আমরির কর্তৃপক্ষ জানায়। সেই মতো গত ১৩ অক্টোবর ভাই-এর অপারেশন হয় আমরিতে। তার পর থেকে হাসনাইন ওই হাসপাতালেই রয়েছে। প্রথমে দেড় লক্ষ টাকার কথা বললেও ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে ৫ লক্ষ টাকা।”
হাসনাইনের চিকিৎসার জন্য মাস দুয়েক থেকে তার দাদা জিয়াউল শেখ রয়েছেন কলকাতায়। হাসনাইনের বোন জুবেদা খাতুন বলে, ‘‘এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচটায় বড়দা জিয়াউল ফোন করে জানান আগুনে মারা গিয়েছে হাসনাইন।’’ বাবা জমি বিক্রি করে, লোক জনের কাছে টাকা ধার করে ভাই-এর চিকিৎসার খরচ মিটাচ্ছিলেন।”
হাসনাইনের বাবা বাহারুল শেখ বলেন, “লেখাপড়ায় হাসনাইনের মাথা ভাল ছিল। সায়েন্স নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল।” তিনি বলেন, “মাস কয়েক আগে মাঝে মধ্যেই ছোট ছেলে মাথার যন্ত্রণার কথা বলত। বছর খানেক তার মার গিয়েছে। তারপরে ছেলেকে আমরিতে নিয়ে দিয়ে ভর্তি করি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.