মেয়ের বিয়ে, ফিরতে চেয়েছিলেন হিরন্ময়বাবু
নেকটাই সেরে উঠেছিলেন তিনি। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, দিন কয়েকের মধ্যেই বাড়ি ফিরতে পারবেন। ‘বাড়িতে অনেক কাজ পড়ে রয়েছে যে’, মাঝে মাঝেই বিড় বিড় করতেন তিনি। সামনের মাঘেই বড় মেয়ের বিয়ে।
হিরন্ময়বাবু বাড়ি ফিরলেন ক’দিন আগেই। চাদরে মোড়া, প্রায় চেনা যায় না তাঁকে। এ ভাবে কি ফিরে আসার কথা ছিল তাঁর?

হিরন্ময়বাবুর বাড়ির সামনে উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরা। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক
কিশোরপুর গ্রামের হিরন্ময় সাহা (৪৭) এএমআরআই-এ ভর্তি হয়েছিলেন দিন পনেরো আগে। কোমরে অসহ্য যন্ত্রণা। সঙ্গে কিডনির সমস্যা। কলকাতার কেষ্টপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে প্রথম দিন থেকেই দাদার চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন হিরন্ময়বাবুর ছোট ভাই মিরনবাবু। বৃহস্পতিবার দাদাকে আগের থেকে অনেকটা সুস্থ অবস্থায় দেখে কেষ্টপুরে সেই আত্মীয়ের বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার সকালে খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন তিনি। মিরনবাবু বলেন,‘‘ দাদা ভর্তি ছিল পাঁচতলায়। এ দিন খবরটা পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। এ দিক ও দিক খুঁজে দাদাকে পাচ্ছিলাম না। প্রায় মিনিট চল্লিশ পরে পাশের পুরনো একটি বিল্ডিং এ দাদার মৃতদেহ দেখতে পাই। দাদা একা নন, পাঁচতলাতে যারা ভর্তি ছিলেন তাদের অধিকাংশই মারা গিয়েছেন শ্বাসকষ্টে।’’
ভুষিমালের ব্যবসায়ী হিরন্ময়বাবুর মৃত্যুর খবরটা কেবল টিভির সৌজন্যে দুপুরের মধ্যেই গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যেতেও সে খবর বাড়ির অন্দরে পৌঁছতে দেওয়া হয়নি তাঁর অসুস্থ মা-বাবার কাছে। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে বাড়িতে কোন প্রতিবেশি বা আত্মীয় ঢুকলেই সদর দরজা থেকেই তাকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে বাড়িতে যেন কেউ কিছু না বুঝতে পারে বাড়িতে যেন কেউ টিভি না দেখতে পারে। সেজন্য কেটে দেওয়া হয়েছিল কেবল লাইন। হিরন্ময়বাবুর এক আত্মীয় বলেন,‘‘ জানি না আর কতক্ষণ খবরটা চেপে রাখা যাবে।’’ এ দিকে বাড়ির সামনে প্রতিবেশিদের জটলা দেখে বারবার সন্দেহ প্রকাশ করছেন হিরন্ময়বাবুর বাবা ও তার ছেলেমেয়েরা। হিরন্ময়বাবুর ছেলে হিমান মহিষবাথান মনোজমোহন বিদ্যামন্দিরের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। বাড়ির ভিতরের পরিবেশ অদ্ভুত রকমের থমথমে হিরন্ময়বাবুর বড় মেয়ে অমৃতা বারবার প্রশ্ন করে, ‘‘বাবার কিছু হয়নি তো, বাড়িতে এত লোকজন আসছে কেন?’’ হিরন্ময়বাবুর ভাগ্নে বিটন সাহা বলেন, ‘‘বড় বোনের বিয়ে আগামী মাঘ মাসে। মামাও বেশ সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন দিন কয়েকের মধ্যেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু এ সব কী হয়ে গেল বলুন তো?’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.