না পোষালে আছে ঘরোয়া টোটকা । দু’টোতেই ত্বকে আসবে ক্যাটরিনা কাইফের
মসৃণতা। কী ভাবে? সংযুক্তা বসু-কে বাতলালেন শর্মিলা সিংহ ফ্লোরা
পত্রিকা: এখনও দিনের বেলা অল্প গরম। সন্ধ্যে বা রাতে শীত শীত। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা সামলে নিজেকে উজ্জ্বল দেখাব কী করে? পার্টি আছে তো! শর্মিলা: এই ধরণের আবহাওয়ায় গায়ের রং ময়লা দেখায়। সেই ত্বকে যদি শীতের ফাটল ধরে তা হলে আর পার্টি করতে হবে না। ত্বকের চকচকে ভাব রাখতে প্রথম যে কাজটা করবেন সেটা হচ্ছে জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানো। লেবুর জল, ডাবের জল, নুন চিনির জল, ফলের রস, প্লেন জল, যে ভাবেই হোক জল খেয়ে যান। তবে চা কফি খাওয়াকে জল খাওয়া মনে করলে মুশকিল। গ্রিন টি খান বরং। ত্বকের যত্নে দারুণ কাজ দেয়।
পত্রিকা: জল খাওয়ার পরামর্শ আর নতুন কী? শর্মিলা: আরও টোটকা বলছি তো...
পত্রিকা: সহজ কিছু বলবেন প্লিজ, এমন এমন সব উপকরণ বলেন, জন্মেও নাম শুনিনি... শর্মিলা: যে গুলো বলছি সে গুলো খুব সাধারণ টোটকা। আর রোজ করাও কঠিন নয়। যেমন স্নানের আগে প্রত্যেক দিন তিল তেল আর সর্ষের তেল মিশিয়ে গায়ে মেখে খানিকক্ষণ রেখে ভাল করে স্ক্রাব করে নিন। তার পর স্নান সেরে সানস্ক্রিন আর টোনার লাগিয়ে বাইরে বেরোন। সানস্ক্রিন ২০ এস পি এফের বেশি যেন না হয়। বাইরে বেরোলে দিনে তিন বার সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। আর বাড়িতে থাকলে ময়শ্চারাইজার।
পত্রিকা: শীতের কামড় বেশি হলে মুখ-হাত-পা’র যা চেহারা হয়! স্লিভলেস বা ছোট ড্রেস পরব কী করে? সহজ উপায় বাতলান প্লিজ। শর্মিলা: সহজই বলছি। সপ্তাহে দু দিন করে আমন্ড, পানিফল বাটার সঙ্গে কাঁচা দুধ মিশিয়ে গায়ে মুখে মাখলে ঝলসাতে শুরু করবেন। শীতের হাওয়ায় ত্বক চিড় খাবে না।
পত্রিকা: পানিফল? সেটা ক’দিন বাজারে পাওয়া যায়? আর ক’জনই বা আমন্ড বাদাম কিনতে পারে? শর্মিলা: ঠিক আছে. পানিফলের বদলে চালের গুঁড়ো। মিক্সিতে করে নেওয়া যায়। আমন্ডের বদলে চিনেবাদাম। চিনেবাদামের দাম তো আর বেশি নয়। এ টুকু জোগাড় করে নিতেই হবে। আর একটা কথা। সারা বছর পার্লারে যান বা না যান, এই সময়টা মাসে অন্তত একবার পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল, বডি অয়েল ম্যাসাজ করান। তাতে বলিরেখা নিয়ে দুশ্চিন্তাটা ম্যানেজ করতে পারবেন। বলিরেখা শীতকালে বেশি চোখে পড়ে।
পত্রিকা: স্পা বাড়িতে করা যায় না? মানে পার্লারে গিয়ে করালে বড্ড পকেটে টান পড়ে তো!
শর্মিলা: আলবাত যায়। আরে একদিন যদি পার্লারে গিয়ে স্পা করেন বাকি রইল ২৯ দিন। সে ক’টা দিন নিজের বেডরুমে নিজেই স্পা-খুলে ফেলুন। অলিভ অয়েল, পাকা পেঁপে, আলু বাটা, ওট মিল দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে গায়ে, হাতে পায়ে মুখে লাগিয়ে শুয়ে থাকুন। শুকিয়ে গেলে স্নান করে নিন। নিজেকে ক্যাটরিনা মনে হবে।
পত্রিকা: মাসে একদিন পার্লারে গিয়ে যা বললেন তাতেও খরচ কম করে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। এই টাকায় মাসের বাজার হয়ে যায়। ক’জন লোক পারবে বলুন?
শর্মিলা: সুন্দর হতে চান, অথচ পার্লারে যাবেন না। আবার ঘরোয়া টোটকা দিলেই কঠিন মনে হচ্ছে। এ কেমন কথা? কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে?
পত্রিকা: বোঝা গেল! তা শীতের ক্যাটরিনা হতে মুখের ত্বকের যত্ন আর গা-হাত-পায়ের যত্ন কি একই রকম হবে না কি?
শর্মিলা: মোটামুটি একই রকম। তবে পায়ের ক্ষেত্রে প্রত্যেকদিন একটা বিশেষ যত্ন নিলে ভাল। প্রত্যেক দিন বাড়ি ফিরে গরম জলে একটু নুন আর লিকুইড সোপ দিয়ে পা ভিজিয়ে রাখুন। পনেরো মিনিট। পা ধুয়ে শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন।
ডাক্তার যা বলেন বলছেন ডা. সুব্রত মালাকার
• স্নান করার পরে মুখে, হাতে, পায়ে
অয়েল বেসড ময়েশ্চারাইজার লাগান।
পত্রিকা: শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পায়ের পাতা,গোড়ালি ফেটে চৌচির হয়ে যায়! এ বারও এমন হলে ক্যাটরিনা হওয়া মাথায় উঠবে তো!
শর্মিলা: কেন উঠবে? শীত এলে তবে পায়ের যত্ন নেব তার আগে পায়ের ওপর পা তুলে আরাম করব এ রকম না ভাবলেই হল! তাই এখন থেকে নিয়মিত ভিটামিন-ই খেতে শুরু করুন। সব ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়। রাতে ই-বেসড নাইটক্রিম লাগিয়ে হাল্কা মোজা পরে শুতে যান।
পত্রিকা: সে কী! যাদের প্রেশার আছে তাদের তো মোজা পরে পা গরম হয়ে গিয়ে শরীর খারাপ করবে...
শর্মিলা: যদি গরম লাগে বা প্রেশার থেকে অসুস্থতার আশঙ্কা থাকে তা হলে মোজার দরকার নেই। বরং পিউমিক স্টোন দিয়ে পা ঘষে নিন।
পত্রিকা: শেষ প্রশ্ন। শীতকালে ঠোঁট ফাটে। অনেকের ছাল উঠে রক্তও পড়ে। রোমান্সের দফা গয়া!
শর্মিলা: এটা এক ধরনের শীতের অ্যালার্জি। ভিটামিন-ই বড়ি খান। আমন্ড তেল ঠোঁটে লাগাতে হবে। খালি পেটে বেদানার রস খান। সমস্যা মিটবে। আর বাইরে যাওয়ার সময় গ্লিসারিনযুক্ত ন্যুড লিপস্টিক লাগালে ফাটা ঠোঁটও নরম তুলতুলে দেখাবে।
চট করে প্যাক (মুখ বা সারা গায়ের জন্য পরিমাণ মতো উপকরণ নিয়ে)
• পরিমাণ মতো চিনেবাদাম বাটা, মধু, ডিমের সাদা অংশ দিয়ে
মিশ্রণ বানিয়ে সারা গায়ে এবং মুখে লাগানো যায়।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.