দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
দীর্ঘ প্রতীক্ষা
মুক্তির আশা
দীর্ঘ দিনের জল-যন্ত্রণা এ বার থেকে মুক্তি পেতে চলেছে কলকাতা পুরসভার ১২২ নম্বর ওয়ার্ড। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কেইআইপি-র দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজে এই ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হবে।”
প্রতি বছর বর্ষা আসার আগে ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা আতঙ্কে ভোগেন। পুরসভা সূত্রে খবর, বড় পাম্প বসিয়েও ওয়ার্ডের জল বের করা যায় না। কারণ, ওয়ার্ডটি কড়াইয়ের মতো। চার পাশের জল এসে জমা হয়। জল নামতে কয়েক মাস কেটে যায়।
বাসিন্দারা জানান, ২৬ বছর আগে ওয়ার্ডটি পুরসভার সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু এই ওয়ার্ডের সোদপুর, ঢালিপাড়া মিশন, অরবিন্দ পল্লি, সূর্য সেন পল্লি,রামকৃষ্ণ নগর, ডলি ভিলা এবং ডাক্তার বাগান-সহ বিশাল এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।
এমনকী, নর্দমাও তৈরি হয়নি। কিন্তু দ্রুত বসতি বেড়েছে। বাড়ির নিকাশি জলও পাশের ফাঁকা জায়গায় জমা হয়। বিগত পুরবোর্ড ২০০৯-এ ১২১, ১২২ এবং ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের জমা জল চড়িয়াল খালে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করেছিল। কিন্তু ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের জল স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও নর্দমা ছিল না। অভিযোগ, অনেক সময়ে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের জল বেড়ে গেলে তা ‘ব্যাক ফ্লো’ করে এই ওয়ার্ডে ঢুকে যেত।
নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের যে সব এলাকা বেশি জলমগ্ন থাকে সেই সব এলাকা চিহ্নিত করে নর্দমা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। কাজও শুরু হয়। দেড় বছরে ২৫২৮ মিটার ভূগর্ভস্থ নর্দমা, ২০৬৫ মিটার বক্স নর্দমা আর ৬৭০ মিটার খোলা নর্দমা তৈরি হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।
তৃণমূলের কাউন্সিলর সোমা চক্রবর্তী বলেন, “বর্ষায় খুব খারাপ অবস্থা হয়। গত বর্ষায় দিন-রাত কুড়িটি পাম্প বসিয়ে জল বের করতে হয়েছে। পাম্প চালাতেও প্রচুর খরচ পড়ে যায়। তাই দেড় বছর আগে কাজ শুরু হয়। যতটুকু কাজ হয়েছে তাতে সামান্য হলেও সমস্যা মিটবে। কিন্তু পুরো কাজ করতে অনেক খরচ। পুরসভার পক্ষে তা একা বহন করা সম্ভব নয়। কেইআইপি-র মাধ্যমে কাজ হলে সমস্যা মিটবে।” পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল ও নিকাশি) রাজীব দেবের কথায়: “কেইআইপি-র দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২২-সহ ১২১ এবং ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশির কাজ হবে।” যদিও কেইআইপি-র প্রজেক্ট অফিসার সুসিতকুমার বিশ্বাস বলেন, “পরিকল্পনা হলেও কাজ শুরু হতে ২০১২ সালের জুন-জুলাই হয়ে যাবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.