খুশিতে বাঁচুন
খোলা আকাশের নীচে
বার বুট ক্যাম্প-এ। একে বারে মিলিটারি কায়দা। ভয় পাবেন না। কঠিন হলেও দুঃসাধ্য নয়।
আগে একটি অভিজ্ঞতার কথা বলি। ব্যাঙ্কের উচ্চপদস্থ কর্মী এক ভদ্রমহিলা কিছু দিন ধরেই শরীর নিয়ে অস্বস্তিতে ভুগছিলেন। মোটা হয়ে যাচ্ছেন। অল্পেই হাঁফিয়ে উঠছেন। কাজেও মন বসছে না। কয়েক বার জিমেও গিয়েছেন। বিশেষ লাভ হয়নি। এর পরে বুট ক্যাম্প-এর কথা শুনলেন। ভয়ে ভয়ে যোগও দিলেন। ফলও পেলেন হাতেনাতে। ছ’মাসের মধ্যেই প্রায় ৯ কিলোগ্রাম ওজন কমেছে। শরীর তো সুঠাম হয়েছেই, উপরন্তু তিনি দিল্লি ও কলকাতার ম্যারাথনে অংশ নিয়েছেন।
বুট ক্যাম্পের উদ্ভব আমেরিকান সেনাবাহিনীতে। তার পরে অনেক বিবর্তন হয়েছে। ‘আমেরিকান কাউন্সিল অন এক্সারসাইজ’-এর মতে, সামনের দশকে বুট ক্যাম্প আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। তা ছাড়া এই পদ্ধতিতে খরচ কম। চোট-আঘাতের আশঙ্কাও কম। যদিও প্রথমে একটু কষ্ট হবে।
সহজ এবং কাজের:
এই পদ্ধতিতে কোনও বাহুল্য নেই। দৌড়নো, লাফানো বা বডি ওয়েট ফাংশনাল মুভমেন্ট-এর মতো মৌলিক দক্ষতাগুলিকে নিয়ে কাজ করা হয়। এতে মাংসপেশি, অস্থি ও কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের চর্চা হয়। বুট ক্যাম্পের কাঠামোটি সরল। প্রশিক্ষক একটি দলকে কার্ডিও, ফাংশন্যাল ও স্ট্রেংথ এক্সারসাইজ মধ্যে দিয়ে নিয়ে যান। কোনও জটিল এবং দামি যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। মূল মন্ত্র হল জিমের একঘেয়ে পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে পর পর কার্ডিও এবং স্ট্রেংথ এক্সারসাইজ করে যাওয়া। মাঝে কোনও অবকাশ নেই। টায়ার ফিল্প, রোপ পুলস, ল্যাডার ড্রিলস এবং বার্পস জাম্পের মতো ব্যায়াম চলতে থাকবে। সারা শরীরের কাজ হয়। অনেক ক্যালরিও খরচ হয়। এই পদ্ধতিতে অল্প সময়ে সারা শরীর অংশ নেয়। তা ছাড়া দ্রুত ব্যায়ামগুলি পাল্টে যায় বলে একঘেয়ে লাগে না।
পারস্পরিক সহযোগিতা:
এখানে একা একা ব্যায়াম করতে হবে না। প্রশিক্ষক ছাড়াও সঙ্গে একটি দল থাকবে। যখন এক জনের কোনও ব্যায়ামের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হয় তখন বাকিরা এগিয়ে আসেন। আর উৎসাহে কী না হয়! তা ছাড়া কোনও দিন না এলে অন্যরা খোঁজ নেন। খোঁজ নিতে বাড়ি পর্যন্ত চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নবিশদের ক্ষেত্রে জিমের থেকে এই ব্যবস্থায় দ্রুত কাজ হয়। জিমের হাজারো যন্ত্র আর কৃত্রিম আবহাওয়ায় অনেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। এখানে খোলা আকাশের তলায় নানা ব্যায়ামের আয়োজন। তা ছাড়া ট্রেডমিলে কয়েক ঘণ্টা অভ্যাসের থেকে মাঠে কয়েক শো মিটার দৌড় বা জিমে কয়েক শো ক্রাঞ্চের থেকে বালির বস্তা কাঁধে নিয়ে দৌড় বেশি কাজ দেয়।
তবে ঠিক ক্যাম্প বেছে নিতে হবে। আসল কথা হল আপনার আকর্ষণ থাকছে কি না? আকর্ষণ না থাকলে কাজ হওয়া মুশকিল। তবে যোগ দেওয়ার আগে প্রশিক্ষক আপনার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেবেন। সব কিছু খুলে বলবেন। যদি প্রশিক্ষক খোঁজ নাও নেন, তবু আগের কোনও চোট-আঘাত থাকলে তা জানিয়ে দেবেন।

ছবি: পিন্টু মণ্ডল

 



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.