ফুটবল খেলতে গেলে বেশি উচ্চতার কি খুব দরকার? আমি তো ছিলাম মোটে ১.৬৫ মিটার। তো আমি বলছি, ফুটবলারের দক্ষতা বিচারের সময় উচ্চতাটা কোনও মাপকাঠি হতে পারে না।
অথচ, গত বছর দশেক অদ্ভুত একটা ব্যাপার লক্ষ্য করছি। কোচ এবং স্কাউটরা লম্বা, শক্তিশালী তরুণ ফুটবলারের খোঁজ করে যাচ্ছে। বেঁটেখাটো প্রতিভাবান ফুটবলারদের নাকচ করে। তারা নিজেদের কাজের সমর্থনে কয়েকজন ফুটবলারের উদাহরণও খাড়া করছে। যেমন, এসি মিলানের দারুণ ভাল ফরোয়ার্ড জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ যার উচ্চতা ১.৯২ মিটার। অথবা, ১.৮৪ মিটারের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বা ওর থেকেও লম্বা ম্যাঞ্চেস্টার সিটির মারিও বালোতেল্লি।
আর এই সব ফুটবলারের জন্যই ইদানীং লম্বা-উঁচু বলে খেলার খুব চল। মাটি ঘেঁষা ফুটবল চলে যাচ্ছিল পিছনের সারিতে। ভাগ্য ভাল, বার্সেলোনার একটা ‘বেঁটে’ প্রজন্ম সবার উপরে চলে এসেছিল। লিওনেল মেসির উচ্চতা ১.৬৯ মিটার, জাভি ১.৭০ মিটার, ইনিয়েস্তাও তা-ই। শুধু কি ওরা? অন্য ক্লাবগুলোর দিকে তাকানলুকা মডরিচ, আমার জামাই আগেরো, কার্লোস তেভেসদের। যাদের কেউই লম্বা নয়। এই সব ছোটোখাটো ফুটবলারের বদলা নেওয়া দেখে বলা যায়, ফুটবল হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র গণতান্ত্রিক খেলা। প্রতিভা থাকলে যে কেউ ফুটবল খেলতে পারে।
বেঁটে ফুটবলারদের ক্ষেত্রে দেহের ভরকেন্দ্র থাকে শরীরের নীচের দিকে। যাতে এদের গতি ক্ষিপ্র এবং ছন্দবদ্ধ হয়। আপনার ছেলের উচ্চতা যদি কম হয়, তা হলেও ও ফুটবল খেলতে পারবে, যদি প্রতিভার আশীর্বাদ থাকে। খেলাটা তো হয় মাটিতেই। আকাশে নয়। ফুটবলে আসলে মাপকাঠি হওয়া উচিত ফুটবলারের হৃদয়ের আকার আর পায়ের প্রতিভা।
এ দিকে জাঁকিয়ে শীত পড়তে শুরু করেছে ইউরোপ জুড়ে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগও ঢুকে পড়ল নক আউট পর্বে। যেখানে সহজেই পৌঁছে গেল এসি মিলান, বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখের মতো বড় দলগুলো। আবার একটু কষ্ট করে হলেও দ্রোগবার স্কিলে ভর করে চেলসিও গেল পরের পর্বে। তবে ধাক্কা খেল ম্যাঞ্চেস্টারের দুই ক্লাব-সিটি আর ইউনাইটেড। নবজন্ম হওয়া নাপোলি ভিয়ারিয়ালকে হারানোর জন্যই ছিটকে গেল সিটি। আর ইউনাইটেডের সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না। লিগ কাপে ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছেও হারল। একমাত্র অ্যালেক্স ফার্গুসনের অভিজ্ঞতাই এই মরসুমে ওদের কোনও ট্রফি দিতে পারে। |