|
|
|
|
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দাঁতনে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দাঁতন |
স্কুল পরিচালন সমিতি এবং অভিভাবকদের অন্ধকারে রেখে আর্থিক লেনদেন করছেন প্রধান শিক্ষক। এমনই অভিযোগ তুলে প্রশাসনিক তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানালেন স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক। দাঁতন-১ ব্লকের বাইপাটনা বিদ্যাসাগর উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সম্পাদক, সিপিএম-ঘনিষ্ঠ রতীশচন্দ্র জানার অভিযোগ, “পরিচালন সমিতিকে কিছু না জানিয়ে প্রধান শিক্ষক টাকা খরচ করছেন। সমিতি বা অভিভাবকদের কোনও হিসেব দেখাননি।”
শুক্রবার এ ব্যাপারে প্রধানশিক্ষক ও সম্পাদককে নিয়ে নিজের দফতরে বৈঠক করেন বিডিও জ্যোতি ঘোষ। তিনি বলেন, “দু’পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে, ২৪ ডিসেম্বর পরিচালন সমিতি, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েত প্রধানের প্রতিনিধির সামনে তিনি সমস্ত নথি-সহ আয়-ব্যয়ের হিসেব পেশ করবেন। প্রতিনিধিদের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ব্যাপারে সরব হয়েছে তৃণমূলও। দলের ব্লক সভাপতি বিক্রম প্রধানের অভিযোগ, “প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতি বহু দুর্নীতি করেছে। প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক। পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রধান শিক্ষককে দায়ী করে নিজে দায় এড়াতে পারেন না।” সিপিএমের দাঁতন জোনাল কমিটির সম্পাদক অনিল পট্টনায়েক অবশ্য বলেন, “প্রধান শিক্ষক পরিচালন সমিতিকে এড়িয়েই কাজ করছিলেন। সম্পাদক তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে বার কয়েক অভিযোগ করলেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্কুলের স্বার্থেই তদন্তে উদ্যোগী হওয়া উচিত প্রশাসনের।”
পরিচালন সমিতির সম্পাদকের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে স্কুল বিধায়ক তহবিল থেকে ৫ লক্ষ, সাংসদ তহবিল থেকে ২ লক্ষ, অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য ৩ লক্ষ ৪০ হাজার, মিডডে মিলের রান্নাঘর তৈরি বাবদ ১ লক্ষ এবং সর্বশিক্ষা অভিযান থেকে ৭ লক্ষ ৮ হাজার টাকা পেয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ফি বাবদ ৭ লক্ষ, শিক্ষকদের অনুদান বাবদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার, স্কুলের জমির ধান বিক্রি বাবদও ৬০ হাজার টাকা আদায় হয়েছে। অথচ এই প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা খরচের কোনও হিসেব দেননি প্রধান শিক্ষক। সম্পাদকের আরও অভিযোগ, মিডডে মিল, তফসিলি জাতি-উপজাতি পড়ুয়া বাবদ অনুদান, শিক্ষার উপকরণ ও বই কেনার জন্য খরচেরও কোনও হিসেব দেননি তিনি।
রতীশচন্দ্রবাবু বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে প্রধান শিক্ষক টাকা খরচের ব্যাপারে সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে কাজ করছেন। যথাযথ রসিদ না দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ফি বাবদ প্রায় ছ’গুণ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে। কম্পিউটার শিক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এ পর্যন্ত একটিও ক্লাস করানো হয়নি।” সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রধান শিক্ষক হরিশঙ্কর খাটুয়া বলেন, “আর্থিক আয়-ব্যয়ের হিসেব যথাযথ ভাবেই করা আছে। বেনিয়ম ও অর্থ তছরুপের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সম্পাদকের অনৈতিক কিছু দাবি মানিনি বলেই আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। সম্পাদকই স্কুলের উন্নয়নে অসহযোগী।” |
|
|
|
|
|