|
|
|
|
জমে উঠেছে দামোদর মেলা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আমতা |
মেলার আনন্দে মেতেছে আমতার রসপুর গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে দামোদর নদ। নদীর জল সরে চর পড়েছে। সেই চরের উপরে ফুটবল মাঠ। সেখানেই গত ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে দামোদর মেলা।
এ বারে মেলার থিম, ‘মানুষের গুণাবলীর বিকাশ’। উদ্যোক্তাদের মতে মানুষের মধ্যে রয়েছে অন্তত ৩০টি গুণ। যেমন প্রেম, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা প্রভৃতি। এই সব গুণাবলী দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ এই গুণের সঠিক বিকাশ না-হলে সভ্যতার সঙ্কট দেখা দেবে।
মেলায় রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৩০টি স্টল। এর মধ্যে যেমন রয়েছে ভারতীয় যাদুঘর, তেমনই রয়েছে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি। মুর্শিদাবাদ থেকে লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী বিকাশকেন্দ্র এসেছে মেলায়। হস্তশিল্পের প্রদর্শন করছেন মুর্শিদাবাদের কান্দির দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা রাসিনা বেগম। তিনি জারি এবং বিয়ের গানেও পারদর্শী। বললেন, “এত মানুষ এখানে আসেন। তাঁদের সামনে হস্তশিল্প প্রদর্শন করতে বেশ ভাল লাগে।” প্রতিটি স্টলের মাথায় লাগানো হয়েছে মানুষের একেকটি ‘গুণ’-এর পোস্টার। |
|
--নিজস্ব চিত্র। |
মেলা প্রাঙ্গণে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাউল, লোকসঙ্গীত, যাত্রা গ্রামবাংলার এই লুপ্তপ্রায় লোক সংস্কৃতিগুলির প্রসারে মেলায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। এ ছাড়াও মূল মেলা প্রাঙ্গনের বাইরে বসেছে দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র, খেলনা এবং জিলিপি-সহ নানা মুখরোচক খাবারের দোকান। বন বন করে ঘুরছে নাগরদোলা। রসপুর, কলিকাতা, ভোজান এই সব গ্রামগুলি সারা বছর সন্ধ্যার পর থেকে সুনসান হয়ে যায়। বাঁধের উপরে তৈরি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের পাকা রাস্তা। সেই রাস্তার ট্রেকার চলাচলের শব্দ ছাড়া বাকি সময়ে সম্বল ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। জনসমাগম বলতে চায়ের দোকানের আড্ডা। একমাত্র ব্যতিক্রম মেলার কয়েকটা দিন। প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তায় চোখ ধাঁধানো আলো, মেলা দেখতে আসা হাজার হাজার লোকের কোলাহল এই এলাকাকে জাগিয়ে রাখে। মেলার উদ্যোক্তা, কলিকাতা গ্রামের ‘অগ্রগতি’। সংস্থার পক্ষে তপন মণ্ডল, মুস্তাক আলি মণ্ডল বলেন, “দামোদর যেমন সবার, তেমনই এই মেলাও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার। সে কারণে মেলার নাম দিয়েছি দামোদর মেলা। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ এই মেলার জন্য মুখিয়ে থাকেন।” মেলা চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। |
|
|
|
|
|