ফের ‘বার্ড ফ্লু’-র আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ত্রিপুরার কোথাও কোথাও। শীতের আমেজ শুরু হতেই পশ্চিম ত্রিপুরার তেলিয়ামুড়া মহকুমার কল্যাণপুর সহ সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামে হাঁস-মুরগি সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মৃত্যু ঘটার খবর মিলেছে। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের কেউ কেউ ভয় পেয়ে নিজেদের হাঁস-মুরগি অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, হাঁস-মুরগির মারা যাওয়ার কারণ ‘বার্ড ফ্লু’ নয়। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে প্রয়োজনীয় সতর্কতামুলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যের প্রাণী সম্পদ দফতরেও হাঁস-মুরগি মরার খবর এসে পৌঁছেছে বলে স্বীকার করেন দফতরের অধিকর্তা মনোরঞ্জন সরকার। তিনি জানান, কল্যাণপুর অঞ্চলে হাঁস-মুরগি মরার খবর পেয়ে দফতরের বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে যান। বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে কিছু মৃত মুরগি ও পাখি তাঁরা তুলে আনেন। গবেষণাগারে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই সব মুরগি ও পাখির মৃত্যুর কারণ ‘বার্ড ফ্লু’ নয়। রাজ্য ল্যাবরেটরিতে মৃত হাঁস-মুরগি পরীক্ষা করে কোনও রকম সন্দেহ দেখা দিলে তবেই সেই নমুনা কেন্দ্রীয় সরকারের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। সেই রিপোর্ট এলে তবেই জানা যায়, মৃত্যুর কারণ ‘বার্ড ফ্লু’ কি না। মনোরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মনে কোনও সন্দেহ দেখা দেয়নি। আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি।”
প্রাণী বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ঋতু পরিবর্তনের সময়ে কিছু হাঁস-মুরগি নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ-জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কোনও কোনও সময়ে মারাও যায়। কল্যাণপুর এলাকায় সেটাই হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা তাঁকে রিপোর্ট দিয়েছেন। তবে ‘বার্ড ফ্লু’-র অতীত অভিজ্ঞতা থেকে এ ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে উপযুক্ত নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ‘বার্ড ফ্লু’র ঘটনার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরও উত্তর-পূর্বাঞ্চল-সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিকে সতর্ক থাকতে বলে দিয়েছে। ত্রিপুরার প্রয়োজনে ভিন রাজ্য থেকে হাঁস-মুরগির বাচ্চা, তাদের খাবার নিয়ে আসা নিয়ে রাজ্য সরকার কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের নির্দেশে তা কয়েক মাস আগে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। |