জমি পাওয়া নিয়ে কোনও সমস্যায় পড়বে না তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। দুর্গাপুর, আসানসোল, শিলিগুড়ি ও হলদিয়া-সহ বিভিন্ন ছোট শহরে জমি দিতে প্রস্তুত রাজ্য। এই প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
বৃহস্পতিবার ইনফোকমের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী শিল্পমহলকে বার্তা দিয়েছিলেন যে, তথ্যপ্রযুক্তিকে হাতিয়ার করেই সকলের জন্য উন্নয়ন সুনিশ্চিত করবে তাঁর সরকার। আর সেই লক্ষ্যে হলদিয়া, দুর্গাপুর, শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা হবে তথ্যপ্রযুক্তি হাব। কল্যাণীতে হবে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফর্মেশন টেকনোলজি। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ‘জমি পাওয়া’ নিয়ে শুক্রবার ইনফোকমের আয়োজকদের মাধ্যমে বার্তা দিয়েছেন তিনি। তাঁর আশ্বাস, রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়তে জমি বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
শুক্রবার ইনফোকমের আয়োজক সংস্থা এবিপি প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দীপঙ্কর দাস পুরকায়স্থর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী সরকারের তরফে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে সাহায্যের আশ্বাস দেন। এবং স্পষ্ট জানান, কল্যাণী, নৈহাটি, ফলতা, শিলিগুড়ি, খড়্গপুর ও আসানসোল-দুর্গাপুর এলাকায় লগ্নি করতে আগ্রহী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে জমি দিতে প্রস্তুত রাজ্য। এ দিন ইনফোকমের মঞ্চে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের এ কথা জানান দীপঙ্করবাবু।
এর জন্য ছোট শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো পরিকাঠামো গড়তেও সরকার সচেষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সে ক্ষেত্রে শুধু সড়ক পরিবহণ নয়, পরিকল্পনা আছে ওই সব এলাকায় বিমানবন্দর গড়ারও।
প্রকৃতপক্ষে ছোট শহরে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প প্রসারে সরকারের আগ্রহের কারণ, আমজনতার কাছে সরকারি পরিষেবা দ্রুত ও সহজে দেওয়া। আর ছোট ও মাঝারি সংস্থা ছোট শহরে পা রাখতে চায় দু’টি কারণে। বড় শহরে আকাশছোঁয়া জমির দাম এবং ছোট শহরে কম খরচে সংস্থা পরিচালনার সুবিধা।
যেমন, অ্যাকলারিস আগেই পা রেখেছে শিলিগুড়িতে। সংস্থার কর্তা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন,“ছোট শহরে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুবই ভাল। দক্ষ মানবসম্পদের জন্যই ব্যবসা শুরু করেছি শিলিগুড়িতে। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে এ ধরনের শহরে কাজ করা লাভজনক। কর্মী ধরে রাখা যায়। পরিকাঠামো খরচও কম।” দুর্গাপুর ও শিলিগুড়িতে কাজ করে খুশি হিন্দুজা গ্লোবাল সলিউশন্স-ও। প্রায় ১৮ কোটি ডলার আয় করা সংস্থাটি দুই শহর মিলিয়ে ইতিমধ্যেই লগ্নি করেছে ২০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে কর্মী সংখ্যা ২৫০০ হওয়ার কথা। এই রকম সাফল্য আশাতীত নয় বলে মনে করে ন্যাসকম-ও। তাদের মতে, ভারতে ছোট-মাঝারি সংস্থার হাত ধরেই শুরু হয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বাড়বাড়ন্ত। সে ক্ষেত্রে ছোট শহরে ব্যবসা করে এই ধরনের সংস্থার টিঁকে থাকা সহজ বলে মনে করে তারা।
তবে বন্ধ সংস্কৃতি নিয়ে এখনও সংশয় কাটেনি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের। সে কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোও হয়েছে। সরকারের তরফে এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেছেন, আন্দোলন চলতে পারে। কিন্তু কখনওই তা ওই সব সংস্থার দরজা বন্ধ করে দিয়ে নয়। |