খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে যে মনমোহন সিংহ আজ সব থেকে বেশি সক্রিয়, তিনিই এনডিএ জমানায় এর বিরোধিতা করেছিলেন বলে অভিযোগ করে আগামী সপ্তাহে সংসদে সরব হতে চলেছে বিজেপি।
বিজেপির শীর্ষ সূত্রের দাবি, কোনও মৌখিক বিবৃতি নয়, এনডিএ জমানায় রীতিমতো লিখিত আকারে মনমোহন সিংহ খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সমালোচনা করেছিলেন। বিজেপির কাছে মনমোহনের সেই লেখার প্রতিলিপিও রয়েছে। মনমোহনের পাশাপাশি কংগ্রেসের আর কোন কোন নেতা এনডিএ জমানায় খুচরো ব্যবসায় বিদেশি
লগ্নির বিরোধিতা করেছিলেন, তারও একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকায় মনমোহন মন্ত্রিসভার বর্তমান সদস্য কমল নাথ যেমন রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সিও। কংগ্রেস সেই সময়ে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নিকে ‘দেশ-বিরোধী’ আখ্যা দিয়েছিল বলে
বিজেপি শিবিরের দাবি।
বস্তুত, খুচরো ব্যবসার দরজা বিদেশি লগ্নির জন্য খুলে দেওয়ার আলোচনা শুরুও হয়েছিল এনডিএ আমলে। তার উল্লেখ করে প্রণব মুখোপাধ্যায় সংসদে বলেছেন, ‘এনডিএ-র আমলে জন্ম নেওয়া শিশুকেই এখন ইউপিএ সরকার লালন-পালন করছে’। কিন্তু এখন রাজনৈতিক ভাবে বিদেশি লগ্নির বিরোধিতারই অবস্থান নিয়েছে বিজেপি। তাই অতীতে বিরোধী পক্ষ থাকার সময় কংগ্রেস কী ভাবে এ বিষয়ে বিরোধিতা করেছিল, তা হন্যে হয়ে খুঁজছেন বিজেপি নেতারা। এমনকী বছর চারেক আগে সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদও খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা করেছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, “এ সবের মধ্যে মনমোহন সিংহের সমালোচনাই রাজনৈতিক ভাবে সব থেকে বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এই মুহূর্তে আমেরিকাকে তুষ্ট করতে তিনিই এই বিষয়ে সব থেকে বেশি সক্রিয়।”
বিজেপি নেতৃত্ব চাইছেন, দুর্নীতি-মূল্যবৃদ্ধি-কালো টাকা উদ্ধারের মতো বিষয়গুলির সঙ্গে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতাকেও এক সূত্রে গাঁথতে। তাঁদের বক্তব্য, এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশের ‘আম আদমি’ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আজই লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিরা লোকসভার স্পিকার ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে দলের সব সাংসদের তরফে হলফনামা পেশ করেছেন। তাতে সাংসদরা বলেছেন, বিদেশি ব্যাঙ্কে কোনও অবৈধ সম্পত্তি নেই তাঁদের। দলের নেতা বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, “এ বার কংগ্রেস-সহ বাকি দলগুলিরও এই পথ ধরা উচিত। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করেও জনপ্রতিনিধিদের এই ঘোষণা করা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে সরকার উদ্যোগী হোক।” টু-জি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম এবং কর্নাটকে অবৈধ খননের ঘটনায় বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণের ইস্তফাও আজ দাবি করেছে বিজেপি। |