অভিজিৎ রক্ষিত
(বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মী) |
শৌচাগারে পড়ে গিয়ে তাঁর বাঁ পা ভেঙেছিল। মা যাতে ভালভাবে চিকিৎসা পরিষেবা পান সে জন্য উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার বাসিন্দা, বৃদ্ধা অনিমা রক্ষিতকে ছেলেরা আমরিতে ভর্তি করেছিলেন।
কিন্তু এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে কে জানত! বাড়ি থেকে আগুন লাগার কথা শুনে তড়িঘড়ি বক্রেশ্বর থেকে ছুটে যান ওই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মী অভিজিৎ রক্ষিত। আতঙ্কে থাকলেও মা বেঁচে গিয়েছেন শুনে স্বস্তিও পেয়েছেন তিনি।
অভিজিৎবাবু জানান, ২৯ নভেম্বর শৌচাগারে পড়ে গিয়ে তাঁর মা অনিমাদেবী বাঁ পা ভাঙেন। পরের দিন তাঁর মাকে তাঁরা আমরিতে ভর্তি করান। অভিজিৎবাবুর কথায়, “গত শনিবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। বৃহস্পতিবার আমি কর্মস্থলে ফিরে আসি। কিন্তু শুক্রবার সকাল ৮টা নাগাদ দাদার ফোন আসে। হাসপাতালে আগুন লেগেছে শুনে আঁতকে উঠি। সেই সঙ্গে দাদা অবশ্য সুখবরও শোনান যে, মাকে এক ব্যক্তি যত্ন সহকারে উদ্ধার নিয়ে আসেন।”
এই খবর শোনার পরে তিনি আর দেরি না করে কলকাতায় চলে আসেন। অভিজিৎবাবু বলেন, “মাকে মুকুন্দপুরে ভর্তি করানো হয়েছে। গিয়ে দেখি তখনও অক্সিজেন চলছিল। মা তখনও কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। যে পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে সেই পায়ে ফের আঘাত লাগে। অক্সিজেন খুলে দেওয়ার পরে মা আমাকে দেখে কেঁদে ফেলেন। কিছুক্ষণ পরে মা নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, আগুন লাগার পরে ঘর ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল। কিছু দেখতে পাচ্ছিলেন না। হঠাৎ কেউ এক জন মায়ের কাছে গিয়ে হাত ধরেন। পায়ে লাগানো যন্ত্র খুলে পাঁজাকোলা করে ওই ব্যক্তি মাকে বাইরে নিয়ে আসেন। কিন্তু উদ্ধারকারীকে মা দেখতে পাননি।”
মাকে উদ্ধার করে আনার জন্য অভিজিৎবাবু উদ্ধারকারীকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি। তিনি বলেন, “যিনি আমার মাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন, ওই উদ্ধারকারীর মঙ্গল হোক।” |