পূর্বস্থলী ১ ব্লকের জাহান্নগর পঞ্চায়েত থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিল বিজেপি। এতে শাসক ও বিরোধী দলের বর্তমান সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল সমান সমান। কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “এই অবস্থায় যে কোনও দলই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে পারে। তখন প্রধানকে সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। আর কেউ যদি অনাস্থা না আনে, সেক্ষেত্রে যেমন চলছে, তেমনই চলবে পঞ্চায়েত।”
পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল-বিজেপি জোট গড়ে এখানে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফল বেরোতেই দেখা যায়, ১৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে আছে ৮টি। বিজেপি পেয়েছে ৪টি আসন। বাকি তিনটি আসনের দখল পায় সিপিএম। এর পরে তৃণমূল-বিজেপি জোট বোর্ড গড়ে। প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন তৃণমূলের শোভারানি দাস। অন্য দিকে উপপ্রধান নিযুক্ত হন বিজেপির জগদানন্দ দেবনাথ। তবে শুরুর মাস দু’য়েক পর থেকেই পঞ্চায়েত চালানোকে কেন্দ্র করে জোটের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। বছর খানেক আগে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আদালতে প্রধান আত্ম সমর্পণ করলে তাঁর জেল হাজত হয়। প্রধান জেল হেফাজতে থাকাকালীন উপপ্রধানই পঞ্চায়েতের কাজকর্ম চালান। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে ফের দায়িত্বভার বুঝে নেন প্রধান। উপপ্রধান জগদানন্দবাবুর কথায়, “শুরুর মাস দু’য়েক আমাদের সঙ্গে তৃণমূল ভাল ব্যবহার করেছিল। তার পর থেকেই ওদের অহঙ্কার প্রকাশ্যে চলে আসে। ওরা দুর্নীতি, স্বজন পোষণে জড়িয়ে পড়ে। জোটে থাকার সুবাদে সে সবের কালি আমাদের গায়েও লাগত। তাই পঞ্চায়েত থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।” বৃহস্পতিবারই বিজেপি থেকে নির্বাচিত চার সদস্য পঞ্চায়েতে গিয়ে তাঁদের সমর্থন তুলে নেওয়া নিয়ে লিখিত পত্র জমা দেয়। উল্লেখ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে তৃণমূলের ৮ সদস্য থাকলেও মাস সাতেক আগে পরেশচন্দ্র নাথ নামে এক সদস্যের মৃত্যু হয়। তিনি রাজাপুর গ্রাম থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। জাহান্নগর পঞ্চায়েতটি পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। এই কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “ওরা সিপিএমের হাত ধরে পঞ্চায়েত ফেলার স্বপ্ন দেখছে। তবে কোনও দিনই তা সম্ভব হবে না।” |