প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কাটোয়ায় কর্মী নিয়োগ করে মাঠে নেমেছে এনটিপিসি
পুরো জমি না মিললে কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার কাজে হাত দেবে না বলে জানিয়েছিল এনটিপিসি। কিন্তু জমি-জট কাটাতে সেখানেই কর্মী নিয়োগ শুরু করল তারা। কাটোয়ার শ্রীখণ্ডে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম (পিডিসিএল) দফতরে বসে বুধবার থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।
এনটিপিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যাপারে আগ্রহী। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বাম আমলেই অনেকটা জমি অধিগৃহীত হয়েছিল। কিন্তু চাষিদের একাংশ বেঁকে বসেন। এর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার শিল্পের জন্য সরাসরি জমি কিনতে বলায় তারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নেমেছে বলে এনটিপিসি সূত্রের খবর।
প্রাথমিক কর্মী নিয়োগের পরে এখন পিডিসিএল-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজে নেমেছে এনটিপিসি। প্রধান উদ্দেশ্য, পরিস্থিতি যাচাই করা। আপাতত যে চার জন কাটোয়ায় এসেছেন তার মধ্যে রয়েছেন এনটিপিসি-র সহকারী জেনারেল ম্যানেজার শিবাশিস বসু ও সিনিয়র ম্যানেজার আরএস বসু। আগামী বুধবার জেনারেল ম্যানেজার রামানুজ মিশ্রও কাটোয়া পরিদর্শনে যাবেন বলে দফতর সূত্রের খবর।
বাম জমানায়, ২০০৫ সালে কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার দায়িত্ব পেয়েছিল পিডিসিএল। ৮০০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট গড়তে ১০৩৩ একর জমি প্রয়োজন বলে তারা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিল। এর জন্য ৮০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলেও তারা সিদ্ধান্ত নেয়। বর্ধমান জেলা জমি অধিগ্রহণ দফতর তাদের হাতে ৫৫২ একর জমি হাতে তুলে দেয়।
পরে পিডিসিএল এবং এনটিপিসি যৌথ ভাবে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়বে বলে ‘মৌ’ স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে এনটিপিসি-কে একক ভাবে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এনটিপিসি কর্তারা জানিয়েছিলেন, ৫৫২ একর জমিতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়া সম্ভব নয়। পুরো জমি না পাওয়া গেলে তাঁরা কাজে হাত দিতে পারবেন না। কিন্তু তার পরেও তারা এক ধাপ এগিয়েছে।
এনটিপিসি-র এক আধিকারিক বলেন, “বিভিন্ন স্তরে আলোচনা চলাকালীন আমাদের কর্মীরা বেশ কয়েক বার কাটোয়ায় গিয়েছেন। জায়গাটি তাঁদের পছন্দ হয়েছে। কাটোয়ায় জমি কিনে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব বলেই আমাদের ধারণা। তাই কাটোয়ায় কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে।” এনটিপিটিসি সূত্রের খবর, প্রথম কয়েক দিন পিডিসিএল-এর কাছ থেকে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে দিল্লিতে সদর দফতরে পাঠাবেন আধিকারিকেরা। সেখান থেকে নির্দেশ এলে জমি কেনার কাজ শুরু করা হবে।
এনটিপিসি সূত্রের খবর, পছন্দসই জমি কেনার ব্যাপারে অফিসারেরা সরাসরি জমিমালিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। তার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “এখন আমরা শুধু পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন করব। আশা করি, এক মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারব।” সংস্থা সূত্রে জানা যায়, সুপার ক্রিটিক্যাল বয়লারের ৮০০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট বসানোর কথা রয়েছে। তার জন্য ১২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। তাতে ১০ হাজার পরোক্ষ কর্মসংস্থানও হবে বলে দাবি।
ইতিমধ্যে পিডিসিএল কোশিগ্রাম মৌজার জমি অধিগ্রহণ করে ফেলেছে। এই কোশিগ্রামের চাষিরাই জমি দেওয়ার ব্যাপারে বেঁকে বসেছিলেন। গড়ে উঠেছিল ‘কৃষি, কৃষক ও খেতমজুর বাঁচাও কমিটি’। এখন আর তার অস্তিত্ব নেই। চূড়পুনি ও শ্রীখণ্ড মৌজার চাষিরাও তাঁদের জমি ‘ন্যায্য দামে’ এনটিপিসি-র হাতে তুলে দিতে রাজি। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এনটিপিসি কর্মী নিয়োগ শুরু করেছে। জমি ক্রয়-বিক্রয়ের সময়ে বিএলএলআরও দফতর এবং সাব-রেজিস্ট্রি দফতর যাতে শ্রীখণ্ডে ক্যাম্প করে, তার জন্য আমরা দাবি জানাব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.