নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
|
শেখ রহমতুল্লা।
নিজস্ব চিত্র। |
গত কালই বাবা ফোনে জানিয়েছিলেন, তিনি প্রায় সুস্থ। খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসবেন।
বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন বছর কুড়ির শেখ খুরশিদ আলম। ততক্ষণে পরিবারের সকলেই জেনে গিয়েছেন কলকাতার ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুর্গাপুরের আমড়াই গ্রামের বাসিন্দা শেখ রহমতুল্লার (৫৫)।
কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী রাবেকা সুলতানা ও মেয়ে আফরোজা খাতুন। ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের হাসপাতালে। ২ ডিসেম্বর তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের ‘র মেটিরিয়াল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্ট’ বিভাগের কর্মী ছিলেন শেখ রহমতুল্লা। শুক্রবার বিকেলে তারই এক সহকর্মী লক্ষ্মীকান্ত সাহা দুঃসংবাদটা দেন রহমতুল্লার ছেলেকে। রহমতুল্লার স্ত্রী রাবেকা সুলতানা জানান, স্বামীর দেখভালের জন্য তাঁর সঙ্গে কলকাতায় গিয়েছিলেন তাঁর এক প্রতিবেশি শেখ আব্দুল আলিম। ওই হাসপাতালের পাশেই একটি হোটেলঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লোকজনের চিৎকার শুনে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে হাসপাতাল। হাসপাতালের কর্মীকে বারবার অনুরোধ করলেও তাঁকে কেউ ভিতরে ঢুকতে দেননি। তাঁর অভিযোগ, “হাসপাতাল কতৃপক্ষ সহযোগিতা না করায় সঠিক খবরটা জানতেই অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়।”
এ দিন দুপুরে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের পক্ষ থেকে ৬ সদস্যের একটি ‘মেডিক্যাল টিম’ কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ হয়ে ওই হাসপাতালে যাওয়া বাকি রোগীদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তকরণে সাহায্য করতেই দলটি কলকাতায় গিয়েছে বলে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঘরের সামনে দাঁডিয়ে বাবার কথা ভাবতে ভাবতে চোখ ভিজে যাচ্ছিল ছেলে শেখ খুরশিদ আলমের। তাঁর আফসোস, “বাবা বলেছিল তাড়াতাড়ি ফিরে এসে বাড়ির দোতলার কাজ সম্পূর্ণ করার ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু তা আর হল না!” |