|
|
|
|
থাকছেন না বুদ্ধদেব |
‘প্রতিহিংসা’র কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলবেন বামেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আজ, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বামেদের অবস্থানে কঙ্কাল-কাণ্ডে ধৃত সুশান্ত ঘোষের প্রসঙ্গ তোলা হবে। বলা হবে, রাজ্য সরকার ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ করছে। যে অবস্থানে থাকছেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি দিল্লি যাচ্ছেন না!
বুদ্ধবাবু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম নেতা সুশান্তবাবুর ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা দলে কারও অজানা নয়। কিন্তু সুশান্তবাবুকে গ্রেফতারের পর দলের ‘লাইন’ মেনে সেই বুদ্ধবাবুকেই প্রকাশ্য সমাবেশে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র কথা বলতে হয়েছে। দলের মধ্যে সুশান্তবাবুকে নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও প্রকাশ্যে সিপিএম রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র অবস্থান নিয়েই চলছে। এই পরিস্থিতিতে রাজধানীর মাটিতেও বুদ্ধবাবুকে দিয়ে সুশান্তবাবুর ‘পক্ষে’ বলানো গেলে তা নিশ্চিত ভাবেই যথেষ্ট ‘গুরুত্ব’ পেত। কিন্তু বুদ্ধবাবু দিল্লি না-যাওয়ায় দলের একাংশে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশঅড় উঠছে, প্রকাশ্যে একবার বলে ফেলেও বুদ্ধবাবু কি দ্বিতীয়বার প্রকাশ্যে সুশান্তবাবুর হয়ে ‘ওকালতি’ এড়িয়ে যেতেই দিল্লির আন্দোলনে গেলেন না?
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু অবশ্য বুধবার বলেছেন, “সকলে তো সব ব্যাপারে যান না! অতীতে যখন বুদ্ধবাবু মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, আমরা বিভিন্ন ব্যাপারে দিল্লিতে অবস্থান করেছি। কিন্তু তিনি তখনও দিল্লি যাননি। এ বারও তাঁর যাওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।”
বুদ্ধবাবুর ঘনিষ্ঠ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ‘শারীরিক’ কারণেই তিনি দিল্লি যাচ্ছেন না। বিধানসভা ভোটে প্রার্থী বাছাইয়ের সময় থেকে এখনও পর্যন্ত গত পাঁচ মাসে রাজ্যের বাইরে যাননি বুদ্ধবাবু। দলের পলিটব্যুরোর বা কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকও এড়িয়ে গিয়েছেন। এবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটল। ঘটনাচক্রে, সিপিএমের বর্ধিত রাজ্য রাজ্য কমিটির বৈঠকে জেলার নেতারা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ভোটে পরাজয়ের পরে বুদ্ধবাবু কেন জেলা সফরে যাচ্ছেন না? তারও কোনও সদুত্তর দলের তরফে দেওয়া হয়নি।
তবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর কোনও সভা বা অবস্থানেই বেশিক্ষণ থাকেননি বুদ্ধবাবু। বক্তৃতা করেই সভা ছেড়েছেন। সে সবই শরীরের কারণে। আরও বলা হচ্ছে, বিমানে চড়ে তাঁর কোথাও না যাওয়ারও প্রধান কারণ শারীরিক। দলীয় সূত্রে আরও খবর, অসুস্থতা থেকে রেহাই পেতে চিকিৎসকরা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে ধূমপান ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু চেষ্টা করেও তিনি তা পারছেন না। বুদ্ধবাবু না থাকলেও বাম সাংসদ, বিধায়ক এবং প্রথম সারির নেতারা প্রায় সকলেই অবস্থানে যোগ দেবেন। দিল্লির যন্তর-মন্তরে ওই অবস্থানে বিমানবাবু ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র দু’জনেই থাকবেন। অবস্থানের পরে সুশান্ত-প্রসঙ্গ তুলে অবিলম্বে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ বনধ করার জন্য বামেরা দাবি জানাবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর সচিবালয়ে যোগাযোগ রাখছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১১ টার পরে সময় চাওয়া হয়েছে। দিল্লি যাওয়ার আগে বিমানবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলছেন রাজ্যে সন্ত্রাসের পরিবেশ নেই। কিন্তু নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধানদের ঘাড়ে বসে তৃণমূলের লোকেরা বলছে, এটা করতে হবে। ওটা করতে হবে। যারা কেউ নির্বাচিত নয়, সকলেই বহিরাগত, তারাই সব নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এরা বলছে, আমাদের কথা না শুনলে পঞ্চায়েত সদস্যকে বাড়ি চলে যেতে হবে। এটা কি সন্ত্রাস নয়?” |
|
|
|
|
|