ফের সংঘর্ষ বহরমপুর কলেজে, জখম ৪
খলদারি নিয়ে তৃণমূল ছাত্রপরিষদ ও ছাত্রপরিষদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে সপ্তাহ দুয়েক বন্ধ ছিল বহরমপুর কলেজ। জেলাশাসকের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকের পর কলেজ খুললেও সপ্তাহ দুয়েক কাটতে না কাটতেই বুধবার ফের ওই দুই ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষে রক্তাত হল বহরমপুর কলেজ ক্যাম্পাস।
এ দিনের ঘটনায় দু’পক্ষের ১১ জন আহত হয়। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই ঘটনার পর কলেজের পঠন পাঠন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় ছাত্র ভর্তিও। নিয়মিত সংঘর্ষের জেরে আজ বৃহস্পতিবার থেকে ওই কলেজটি কার্যত পুলিশের হাতেই তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডল বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে কলেজের ভিতরেও পুলিশের গতিবিধি অবাধ থাকবে। তাঁরা কলেজের ভিতরে টহল দেবেন। আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে কলেজের ভিতর থেকে পুলিশ যাকে মনে করবে তাকেই গ্রেফতার করবে।”
তবে অধ্যক্ষ ও শিক্ষক সংসদের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর ‘শর্ত সাপেক্ষে’ এ দিন কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিল ছাত্রপরিষদ। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে তাই ওই কলেজে স্বাভাবিক পঠনপাঠন হওয়ার কথা।
কৃষ্ণনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের সভাপতি তথা সংস্কৃতের বিভাগীয় প্রধান অমল ভট্টাচার্য বলেন, “ধর্মঘটের জেরে শুরু হওয়া অচলাবস্থা কাটাতে কলেজের অধ্যক্ষ এ দিন ছাত্র সংসদ ও শিক্ষক সংসদের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করেন। শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে ওই আলোচনায় মূলত তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
তিনি জানান, কলেজের দু’টি গেটে স্থায়ী পুলিশি পাহারা মোতায়েন করা হবে। কলেজের ছাত্র ছাড়া বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ। এ দিনের আলোচনা সভায় ছাত্র ও শিক্ষকদের নিয়ে গঠন করা যৌথ কমিটি আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখভাল করবেন। তবে ছাত্রপরিষদের কৃষ্ণনাথ কলেজ শাখার সভাপতি ইন্দ্রনীল বিশ্বাস হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, “আমাদের দেওয়া শর্ত না মানলে ফের আন্দোলনে নামা হবে।”
এ দিকে, কৃষ্ণনাথ কলেজে অচলাবস্থার মেঘ কাটলেও বহরমপুর কলেজে ফের অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে চলেছে। প্রায় প্রতি দিন সংঘর্ষে জেরবার বহরমপুর কলেজ গত ২১ জুলাই বন্ধ করে দেওয়া হয়। জেলাশাসকের ডাকা সর্বদলীয় সভার পর গত ৮ অগস্ট ফের কলেজ চালু করা হয়। তবে বুধবার দুপুরে কলেজের ক্যান্টিনে তৃণমূল ছাত্রপরিষদ ও ছাত্রপরিষদের মধ্যে সর্ংঘষ বেধে যায়। রড, লাঠি দিয়ে দু’পক্ষের দুষ্কৃতীরা পরস্পরকে মারধর করে।

কৃষ্ণনাথ কলেজে বহরমপুর কলেজে
• কলেজের দুই গেটে পুলিশ প্রহরা। • কলেজে পুলিশি টহলদারি চলবে।
• বহিরাগতদের কলেজে
ঢুকতে দেওয়া হবে না।
• প্রয়োজন হলে কলেজ চত্বর থেকে
যে কাউকেগ্রেফতার করবে পুলিশ।
• ছাত্র ও শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত যৌথ কমিটি
আইন-শৃঙ্খলারদেখভালের দায়িত্বে।
• শান্তি ফেরাতে রাজনৈতিক দলগুলির
কাছে আবেন অধ্যক্ষের।

তৃণমূল ছাত্রপরিষদের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি পার্থ পাল বলেন, “এ জেলায় ছাত্র পরিষদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। ওই কারণে অন্য কলেজের মতোই বহরমপুর কলেজে বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে মারধর করছে ছাত্র পরিষদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।” ছাত্রপরিষদের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান বাপ্পার পাল্টা অভিযোগ, “তৃণমূল ছাত্রপরিষদ এ জেলায় দাঁড়ানোর মতো মাটি না পেয়ে বামফ্রন্টের দুষ্কৃতীদের সাহায্যে জেলার বিভিন্ন কলেজ জবরদখল করার জন্য সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে।”
সমরেশবাবু বলেন, “বহিরাগত কোথায়? এ দিন তো মারপিট করেছে কলেজের ছাত্ররাই। ফলে মাঝপথে পঠনপাঠন বন্ধ করে দিতে হয়। পঠনপাঠন চালু থাক ও কলেজে শান্তি-শৃঙ্খলার পরিবেশ বজায় থাকুকএটা চায় সব ছাত্রছাত্রীই। অশান্তি করছে শতকরা মাত্র ২ ভাগ ছাত্র। তাদের জন্য ভুগছে বাকিরা।” তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে কলেজের ভিতরেও পুলিশকে টহল দিতে বলেছি। প্রয়োজনে কলেজের ভিতর থেকেও গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে অনুমতি দিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.