একটি বেসরকারি বাস উল্টে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। বুধবার সকালে বড়ঞার হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়কের ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন ৫ শিশু ও ১১ জন মহিলা-সহ ৫২ জন যাত্রী। আহতদের মধ্যে ৪ জন গুরুতর জখম অবস্থায় বহরমপুর নিউ জেনারেল এবং বাকি ৩৪ জন কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সরিফ শেখ (১৮) বড়ঞার সত্যচন্দ্রনগরের, খুশিরুল শেখ (১৯) বহরমপুরের, ননীগোপাল হাজরা (২০) বড়ঞা এবং বাসের খালাসি মধুসূদন গড়াই (৩২) বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের কুরিচা গ্রামের বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন বাসটি নির্ধারিত সময়ের থেকে প্রায় দশ মিনিট দেরিতে চলছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কান্দি বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছনোর জন্য ভাঙা রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটতে থাকে পাঁচথুপি-বহরমপুর রুটের বাসটি। বহরমপুর যাওয়ার সময় আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি রাস্তার ডান দিকে নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চার জনের। কান্দির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অনামিত্র দাস বলেন, “নিয়ন্ত্রণ হারানোয় এমন বিপত্তি হয়েছে। তবে বাসটিতে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাসের খালাসি মারা গিয়েছে। চালক পালিয়ে গিয়েছে।” |
ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরেই বড়ঞার আকম্বা গ্রাম। যাত্রীদের আর্তনাদ শুনে ছুটে এসেছিলেন গ্রামবাসীরা। তাঁরাই প্রাথমিক ভাবে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। গ্রামের বাসিন্দা তুহিনা বিবি বলেন, “একটা বিকট আওয়াজ শুনতে পেয়ে ছুটে গিয়েছিলাম। সেখানে পৌছে দেখি নয়ানজুলিতে বাসটি উল্টে আছে। অনেকে চিৎকার করছেন। যাত্রীদের অনেকেই বাসের জানলা দিয়ে হাত, পা অনেকে মাথা বের করে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। গ্রামের ছেলেরা যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।” চালকের আসনের পাশেই বসেছিলেন গুরুতর জখম কুমার কৈবর্ত। তিনি বলেন, “বাসটি ঠিকঠাকই চলছিল। আচমকা কিছু বুঝে ওঠার আগে ডান দিকে উল্টে যায়। তবে যাত্রীদের অনেকের অভিযোগ, বাসটি নির্ধারিত সময় থেকে অনেক দেরিতে চলছিল। বাস ছাড়ার সময় হলেও বড়ঞা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলেন বাসকর্মীরা। তারপর বেপরোয়া ভাবে ছুটতে থাকে। বাস যাত্রী হানিফ শেখের অভিযোগ, “বাসে অনেক যাত্রী ছিল। তবু যাত্রী তোলার জন্য বড়ঞা বাসস্ট্যান্ডে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েছিল বাসটি। তারপর সেটি ছুটতে শুরু করে।”
এ দিকে, ওই রাজ্য সড়কের হাল বেশ খারাপ। ওই এলাকায় রাস্তা সংস্কার নিয়ে বাস মানিক সংগঠন লাগাতার আন্দোলন করেছিল। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। কান্দি বাস সিন্ডিকেটের সহ-সম্পাদক বিমল চক্রবর্তী বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। কিন্তু ওই রাস্তা দিয়ে যে বাস চলছে সেটাই বড় কথা।” |