মহকুমা চেম্বার অফ কর্মাসের সভাপতি পার্বতীশঙ্কর নন্দী বলেন, “বছরের সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় ঈদের সময়। এ বছর টানা বৃষ্টির জন্য তা পুরোপুরি বন্ধ। ফলে এমনিতেই চরম ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা। এ ভাবে বৃষ্টি আরও কিছুদিন চললে তো বন্যা দেখা দেবে।” জলঙ্গি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন সাহা বলেন, “পদ্মার ভাঙনের জন্য বাজারের বেচাকেনা অনেক কমে গিয়েছে। বেশ কিছু দোকানপাটও ভেঙে গিয়েছে। তবে এ বারের বৃষ্টির জন্য বাজার ভেসে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।”
বন্যার আশঙ্কা নেই ডোমকল বাজারে। কিন্তু গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এমনিই ভেসে গিয়েছে সে বাজার। এ ক্ষেত্রে ভিলেন অবশ্য বেহাল নিকাশি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সংস্কারের অভাবে বেশিরভাগ নর্দমাই আবর্জনায় বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে নোংরা জলে ভরে গিয়েছে রাস্তা। মাঝেমধ্যে সে জল দোকানে ঢুকে পড়ে। ফলে ক্রেতাদের যাতায়াত কমেছে। বহু ব্যবসায়ী জমা জলের জন্য দোকান খুলতে পারছেন না। অথচ এই উৎসবের অপেক্ষায় সারা বছর কাটিয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। ফল ব্যবসায়ী সুইট মণ্ডলের আক্ষেপ, “রোজার সময় যেহেতু ভাল বেচাকেনা হয় তাই বহু ফল তুলেছিলাম। বহু লোক বাজারে আসতে পারছে না। ফলে সেগুলি পচতে বসেছে। আমার মত ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।”
একই সমস্যা মহকুমার অন্য বড় বাজার ইসলামপুরের। ইসলামপুর বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক শঙ্কর মণ্ডলের কথায়, “বাজারে এ বছর কেনাবেচা কম। সারাদিন দোকান খুলে বসে থাকা ছাড়া কোনও কাজ নেই।” ডোমকলের বিধায়ক সিপিএমের আনিসুর রহমান বলেন, “ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে প্রশাসনকে নিকাশির উন্নতির জন্য কাজ করতে অনুরোধ করব। যুগ্ম বিডিওকেও বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।”
পাশাপাশি, বহরমপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা দুর্গাপুজোর পরে ঈদের বাজারের কেনাকাটার উপরে নির্ভর করে থাকেন। বৃষ্টি থামতে সে বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা সেরে নিতে ব্যস্ত মানুষ। সব্জির বাজার দর সাধারণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও ঈদে নতুন পোশাক কেনাকাটায় তাঁদের খামতি নেই।
সব্জির পাশাপাশি ফলের বাজারও মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। তবে সারা দিন উপবাস থাকার পরে সন্ধ্যায় রোজা ভাঙার জন্য প্রতি বছর এই সময়ে ফলের চাহিদা থাকে। বুধবার বহরমপুরের বিভিন্ন ফলের বাজারে আপেল ৮০-৯০ টাকা কিলো দরে, নাসপাতি ৮০ টাকা, বেদানা ১০০ টাকা, পাকা পেঁপে ৪০ টাকা, তরমুজ ৪০ টাকায় বিকোচ্ছে। কমলালেবু প্রতিটি ১২টাকা, মুসম্বি প্রতিটি ৫-৮ টাকা, কলা ডজন প্রতি ২৪-৩০ টাকা। আনারস প্রতিটি ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে শুকনো খেজুর কিলো প্রতি ১৫০ টাকা, প্যাকেটের খেজুর ৫০-১০০ টাকা দরে, কিলো প্রতি মোরব্বা ৭০ টাকা, আখরোট ৭০০ টাকা, চেরি ও আমসত্ত্ব ১০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বাজারে তার চাহিদা রয়েছে। |