অলচিকি শিক্ষক নিয়োগে পরিকল্পনা
দিবাসী-এলাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিকস্তরে পঠনপাঠনের মাধ্যম হিসাবে সাঁওতালি ভাষা এবং অলচিকি লিপি চালুর দাবি দীর্ঘ দিনের। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে বেশির ভাগ স্কুলেই তা চালু হয়নি। তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আদিবাসী-এলাকার স্কুলগুলিতে অলচিকি জানা শিক্ষক নিয়োগে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েছে নতুন সরকার। ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। সেই রিপোর্ট পৌঁছনোর পরে রাজ্য সরকার শিক্ষক-নিয়োগে পদক্ষেপ করবে বলে জেলা প্রশাসনের বক্তব্য। আপাতত জেলার জঙ্গলমহলের ১১টি ব্লকে অলচিকি জানা নতুন শিক্ষক নিয়োগে বেশি উৎসাহী রাজ্য সরকার। ওই ব্লকগুলিতে কতগুলি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে, তার মধ্যে কতগুলি স্কুলে ৫০ শতাংশের বেশি আদিবাসী ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে, ওই স্কুলগুলিতে কোথাও কোনও অলচিকি লিপি জানা শিক্ষক রয়েছেন কি না, থাকলে কত জনএ ধরনের ‘জরুরি’ কিছু তথ্য-সহ রিপোর্ট পাঠাতেই জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই সেই তথ্য-সংগ্রহের কাজ শুরুও করেছে জেলা প্রশাসন। সেই তথ্য-সংগ্রহ করতে গিয়েই দেখা যাচ্ছে, জঙ্গলমহলের ১১টি ব্লকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬৮৪টি। তার মধ্যে ৯৩৭টি স্কুলেই পঞ্চাশ শতাংশ বা তার বেশি আদিবাসী ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। অর্থাৎ ৯৩৭টি স্কুলে অলচিকি লিপিতে পড়াশোনা চালুর দাবি রয়েছেই। কিন্তু সেই ৯৩৭টি স্কুলেও অলচিকি জানা শিক্ষকের সংখ্যা মাত্রই ৪১০ জন। অর্থাৎ প্রতিটি স্কুলে অন্তত এক জন করে অলচিকি জানা শিক্ষকও যদি থাকতে হয়, তা হলে নতুন করে অন্তত ৫২৭ জন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। এই ১১টি ব্লকে মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে ৩১৭টি। আদিবাসী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাধিক্য রয়েছে এমন স্কুলের সংখ্যা ১৪৭। কিন্তু এই স্তরে বর্তমানে অলচিকি জানা শিক্ষকের সংখ্যা মাত্রই এক জন! প্রতিটি স্কুলে এক জন করে অলচিকি জানা শিক্ষক থাকতে হলেও নতুন করে অন্তত ১৪৬ জন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
ইতিমধ্যেই অলচিকি লিপিতে এমএ পাঠক্রম চালু হয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়েও আগের সরকারের আমলেই অলচিকি চালু হয়েছে। ঝাড়গ্রামের একলব্য স্কুল অন্যতম। কিন্তু আগের সরকার আদিবাসী-এলাকায় ধাপে ধাপে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়েই অলচিকি চালুর প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রাথমিক ভাবে ৫২টি স্কুলে অলচিকি চালুর ঘোষণা হলেও ‘মাঝি মাড়ওয়া জুয়ান গাঁওতা’র মতো আদিবাসী সংগঠনের বক্তব্য, ৫২টি স্কুলে অলচিকি চালু হয়েছে বলে সরকার দাবি করলেও সব স্কুলে ঠিক পদ্ধতিতে পড়াশোনা হচ্ছে না। বড়জোর ১৫টি স্কুলে ঠিক ভাবে পড়ানো হচ্ছে। বাকি স্কুলগুলিতে বই দেওয়া হলেও অলচিকির উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সংগঠনের দাবি, শিশুশিক্ষা কেন্দ্র থেকেই অলচিকি চালু করা হোক। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরে তারা ইতিমধ্যে সে দাবি জানিয়েওছেন।
তবে, জেলা প্রশাসনের একাংশে একটি ব্যাপারে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে। এমন কোনও স্কুল নেই যেখানে সমস্ত ছাত্রছাত্রীই আদিবাসী। প্রতিটি স্কুলেই অ-আদিবাসী ছাত্রছাত্রীও রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অলচিকি বাধ্যতামূলক করা যায় না। মাধ্যমিক-স্তরে সমস্যাটা আরও বেশি। সর্বত্র অলচিকি লিপি চালুর ক্ষেত্রে তাই কিছু সমস্যাও রয়েছে। এ ব্যাপারে কী করণীয়, সে নিয়ে রাজ্যস্তর থেকে স্পষ্ট নির্দেশিকা চাওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের বক্তব্য।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.