|
|
|
|
বিজলি বাতির আলোয় উজ্জ্বল গ্রামের ৭০টি বিপিএল পরিবার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • উলুবেড়িয়া |
বুধবারের রাতটা একটু অন্যরকম ছিল উলুবেড়িয়ার বাণীবনের ব্রাহ্মণপাড়া, পণ্ডিতপাড়া-কামারপাড়া এবং বাগপাড়ায়। তিনটি গ্রামের ৭০টি পরিবারে স্বাধীনতার পরে প্রথম বিদ্যুতের আলো জ্বলল। কালীপুজোর বাকি এখনও প্রায় দু’মাস। তার আগেই যেন দিপাবলীর রাত নেমে এল এই তিনটি গ্রামে।
‘রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণ’ প্রকল্পে এই তিনটি গ্রামে দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারীদের বাড়িতে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হল এ দিন। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজটি করছিলেন ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে প্রতিটি পরিবারে হাজির হয়ে নিজের হাতে আলো জ্বালিয়ে দেন উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজি।
এই উপলক্ষে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ ছিল দেখার মত। ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা কখন আসেন সেই অপেক্ষায় সকাল থেকে উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলেন গ্রামবাসীরা।
বাণীবন বাগপাড়ার বাসিন্দা শিবু অধিকারী, শম্ভূ পাত্র, নেপাল পাত্রেরা বলেন, “সেই কবে আমাদের গ্রামে খুঁটি পোঁতা হয়েছে। বাড়িতে তারও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা ওয়ারিংও করে নিয়েছি। তার পরে ধৈর্য্যের বাঁধ মানছিল না। কবে ঘরে আলো জ্বলে বহু দিন ধরে সেই অপেক্ষায় ছিলাম।” |
|
— নিজস্ব চিত্র। |
রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুতিকরণ প্রকল্পটিতে দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে বিনা খরচে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। খুঁটি বা গ্রাহকের বাড়ি পর্যন্ত তার নিয়ে যাওয়ার জন্য গ্রাহককে কোনও খরচ দিতে হয় না। এ ছাড়াও গ্রাহকদের বাড়িতে মিটার, মেইনস্যুইচ এবং একটি সিএফএল বাতিও দিয়ে দেওয়া হয় বিনা পয়সায়। ‘ওয়ারিং’-এর খরচ অবশ্য গ্রাহকদের। অতিরিক্ত বাতি জ্বালানো এবং পাখা চালানো হলে তার জন্য যে অতিরিক্ত খরচ হবে তা-ও বহন করতে হবে গ্রাহককে।
রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা সূত্রের খবর, এই তিনটি গ্রামে বিদ্যুৎ আনতে লেগেছে মোট ৭০টি খুঁটি। বিধায়ক বলেন, “এই উদ্যোগে গরিব মানুষগুলির মুখে হাসি ফুটেছে।”
তিনটি গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন ৭০টি বিপিএল তালিকাভূক্ত পরিবার। এই সব এলাকায় যাঁরা বিপিএল তালিকাভূক্ত নন, তাঁরা নিজের খরচে আগেই বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে নিয়ে ছিলেন। বাদ ছিল বিপিএল পরিবারগুলি।
হাওড়া জেলায় প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার এক কর্তা জানালেন, এই জেলায় মোট ১০০০টি জায়গায় তাঁরা বৈদ্যুতিকরণের কাজ করবেন। তার মধ্যে ২৭০টি জায়গায় এর আগে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ওই সব গ্রামগুলিতে রাতে বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। তার সঙ্গে জুড়ে গেল বাণীবনের নাম। পেশায় দিনমজুর শম্ভূ পাত্র, নেপাল পাত্রেরা বললেন, “এই প্রথম নিজের বাড়িতে বিজলি বাতি দেখে কী যে আনন্দ হচ্ছে, বলে বোঝাতে পারব না!” |
|
|
|
|
|