হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে চলছে তাঁর নীরব লড়াই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে।
হাইলাকান্দির এস কে রায় সিভিল হাসপাতালে ভর্তি শঙ্কর নাথকে দেখতে কৌতূহল রয়েছে যথেষ্ট। ন’দিন পেরিয়ে গিয়েছে ৪০ বছর বয়সী বরাকের এই মানুষটির অনশন। নিজেকে বলছেন অণ্ণা হজারের ভাবশিষ্য। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর নিজের জেহাদটাও তো দীর্ঘ দিনের। |
ইন্দিরা আবাস যোজনার দাবি জানাতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল পেশায় রাজমিস্ত্রি শঙ্করের। বিভিন্ন সময়ে হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন, ঘুষ ছাড়া কোনও কাজই হচ্ছে না। তাই নিজের মতো করেই নেমে পড়েছেন লড়াইয়ে। সম্প্রতি রামদেবের অনশনের সময়েও নির্জলা উপবাস করেছিলেন। পড়শিরা পর্যন্ত জানতে পারেননি সে কথা। এ বারেও টানা উপবাসে অসুস্থ হয়ে না-পড়লে কেউ জানতে পারত না। গত শুক্রবার, অনশনের চতুর্থ দিনে স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও পরিবারের লোকেরা লালা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান তাঁকে। সেখান থেকে পাঠানো হয় হাইলাকান্দির হাসপাতালে। স্যালাইন চলছে, কিন্তু মুখে খাবার তুলছেন না। অতিরিক্ত জেলাশাসক এ এনবি সিংহ, হাসপাতালের সুপার ডাঃ এ কে বায়ন-সহ অনেকে অনুরোধ করেছেন অনশন তুলতে। স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক, রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী গৌতম রায় ফোনে কথা বলেছেন। ইন্দিরা আবাসন প্রদানেরও প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। কিন্তু শঙ্কর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টি এখন আর তাঁর ইন্দিরা আবাসে আটকে নেই। অণ্ণা অনশন প্রত্যাহার করলেই তিনি খাবার মুখে তুলবেন। শঙ্করের কথায়, জন লোকপাল বিলের কথা তিনি টিভিতে শুনেছেন। এই বিল কার্যকর হলে দেশের সর্বস্তরে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে। গরিবদের জন্য এই বিল খুব দরকার। শঙ্করের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার। তবে বলেছেন, শঙ্করের গ্যাসট্রিক আলসারের সমস্যা রয়েছে। তাই স্যালাইনের সঙ্গে ওষুধও চলছে। সরকার তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিচ্ছে প্রতি দিনই। সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সামলাতে শঙ্করকে কেবিনে সরানো হয়েছে। |