নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
রাতুরিয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের বেহাল রাস্তা নিয়ে এলাকাবাসীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি টানা বর্ষণে রাস্তার হাল আরও খারাপ হয়েছে। স্বভাবিকভাবেই চলাচলের অযোগ্য এই রাস্তা দিয়ে কারখানায় জিনিসপত্র আনা নেওয়া করতে বিপাকে পড়ছেন বিভিন্ন কারখানার কর্তৃপক্ষ। বিপদের ঝুঁকি নিয়েই চলছে ভারি লরি, ট্রাক। অবিলম্বে রাস্তা সারাইয়ের দাবি জানিয়েছেন কারখানা মালিকেরা।
দুর্গাপুর ও সংলগ্ন এলাকার বহু পুরনো শিল্পতালুকগুলির মধ্যে রাতুরিয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুক অন্যতম। ১৯৯৭ সালে এই শিল্পতালুকের প্রথম কারখানাটি উৎপাদন শুরু করে। এর পরে একে একে গড়ে উঠেছে আরও অনেক কারখানা। এই শিল্পতালুকে সব মিলিয়ে বর্তমানে কারখানার সংখ্যা ১৬ টি। গ্যামন ব্রিজ মোড় থেকে হ্যানিম্যান সরণি ধরে ঢুকতে হয় এই শিল্পতালুকে। গত কয়েক বছর ধরেই সেই রাস্তার বেহাল অবস্থা। দিনের পর দিন ভাঙা রাস্তায় ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করেন এলাকাবাসী। শিল্পতালুকের ভিতরের রাস্তার অবস্থা অবশ্য তুলনামূলক ভাবে ভাল। কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে বার বার অভিযোগ তোলা হয়েছে বেহাল রাস্তা নিয়ে। |
সামান্য তাপ্পি মেরে কাজ চালানো হয়েছে। সংস্কার করা হয়নি একবারও। ফলে দিনের পর দিন পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
দিন কয়েক আগের টানা বৃষ্টিতে রাস্তার খানা খন্দে জল জমেছে। তার উপর দিয়েই বিপজ্জনকভাবে চলাচল করেছে কারখানার ভারি ভারি লরি। ফলে ভিজে নরম রাস্তার কোনও দিক বসে গিয়েছে তো কোনও দিক উঁচু হয়ে গিয়েছে। যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে শিল্পতালুকের ভিতরের রাস্তা। শ্যাম ফেরো অ্যালয় লিমিটেড এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বীরভদ্র রাও জানান, শিল্পতালুকের রাস্তাঘাটের দ্রুত আমুল সংস্কার প্রয়োজন। তা না হলে যে কোনও সময়ে ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। তিনি বলেন, “বেহাল রাস্তার উপর দিয়ে মালবোঝাই লরি চলাচলের সময় যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ছে। প্রাণ হাতে করে লরি চালাচ্ছেন চালক ও খালাসিরা।” একই কথা জানিয়েছেন শোভা অ্যালয় ইস্পাত কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সমীরকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “শিল্পতালুকের রাস্তাঘাট ঝকঝকে থাকলে কাজেরও অনেক সুবিধা হয়। কিন্তু আমাদের এখানে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।” লরি চালক ওমপ্রকাশ সিংহ, শ্যামল মণ্ডলরা বলেন, “শিল্পতালুকের ভিতরে ঝুঁকি নিয়ে লরি চালাতে হয়। সময় নষ্ট নয়। জ্বালানি তেলের অপচয় হয়। মাঝে মাঝেই যন্ত্রাংশ বিগড়ে যায়।”
স্থানীয় তৃণমূল নেতা অশোক দত্ত বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এই শিল্পতালুকের ভিতরের রাস্তাঘাট ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তা মেরামতের কোনও উদ্যোগই হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, মুখে শিল্পায়নের স্বপক্ষে কথা বললেও এলাকায় শিল্পের পরিকাঠামো উন্নয়নে কোনও উদ্যোগই নেয়নি পূর্বতন আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা (এডিডিএ)। সেই জন্যই এই শিল্পতালুকের রাস্তাঘাট এমন বেহাল হয়ে পড়েছে। এডিডিএ’র নতুন চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওই শিল্পতালুকের বেহাল রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি বিষদে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |