নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
দলের ঘোষিত নীতি যে নিচুতলার তৃণমূল কর্মীদের কাছে ঠিক মতো পৌঁছচ্ছে না, ফের তার প্রমাণ মিলল দুর্গাপুরে। তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব বারবার বন্ধ-অবরোধের রাজনীতি থেকে বিরত থাকার কথা বলছেন। কিন্তু দুর্গাপুরে আইএনটিটিইউসি-র নেতৃত্বে বিভিন্ন দাবি-দাওয়ায় একটি বেসরকারি বাস সংস্থার কর্মীদের ধর্মঘটের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুর-কলকাতা রুটের ১০টি বাস।
সংগঠনের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেওয়া হলেও বাসগুলি চালু হয়নি। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক মৌমিতা বসু বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন। |
চিত্রালয় মেলা ময়দানে বুধবার ছবি তুলেছেন বিকাশ মশান। |
বাস সংস্থার চেয়ারম্যান কালীদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভূতল পরিবহণ সংস্থার কাছে রুট নিয়ে তাঁরা কলকাতা-দুর্গাপুর রুটে ১০টি বাস চালান। টায়ার, তেলের দাম, বিমা বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়ায় সংস্থাটি গত এক বছর ধরে লোকসানে চলছে। কর্মীদের তাঁরা সে কথা জানিয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন। কিন্তু গত শুক্রবার বিকেলে সাদা কাগজে লিখে বাসকর্মীরা শনিবার থেকে কাজ না করার কথা জানান। বেতন বৃদ্ধি, ইএসআই, পিএফ-সহ বিভিন্ন দাবিতে বাসকর্মীরা ধর্মঘট শুরু করেন। পরের দিন সকালে তাঁদের তৃণমূলের পতাকা হাতে আসা ওই কর্মীদের থেকে জানা যায়, আইএনটিটিইউসি-র নেতৃত্বেই তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আগাম টিকিট কেটে রাখা সব যাত্রীকে খবর দিতে না পারায় অনেকেই ওই দিন সকালে বাস ধরতে এসে নাকাল হন। স্থানীয় আইএনটিটিইউসি নেতা নিখিল কীর্তনিয়া জানিয়ে দেন, কর্মীদের দাবি না মানা হলে টানা ধর্মঘট চলবে।”
বাস সংস্থা সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি তারা আইএনটিটিইউসি জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানান। তার পরেই দলীয় পতাকা খুলে ফেলা হয়। সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, তৃণমূলের পতাকা ব্যবহার করে অরাজকতা বরদাস্ত করা হবে না, তা ওই বাসকর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই বাসকর্মীরা আর কাজে যোগ দেননি। সংস্থার চেয়ারম্যান কালীদাসবাবু বলেন, “আমাদের লোকসান বাড়ছে। বাস না চলায় কর্মীদেরও রোজগার বন্ধ। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দেওয়ার পরেও কর্মীরা অনড়।” বাসকর্মীদের পক্ষে বাপি সরকারের অভিযোগ, “বাসের চাকা পুরনো। তা ছাড়া দু’টি বাসের রাস্তায় চলাচলের প্রয়োজনীয় অনুমতি নেই। তাই কর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন।” কালীদাসবাবু অবশ্য এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি প্রভাতবাবু বলেন, “ওই বাস সংস্থায় তৃণমূল অনুমোদিত কোনও সংগঠন নেই। দাবি-দাওয়া যা আছে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”
এ দিকে, এক সঙ্গে ১০টি বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। বাস সংস্থার পক্ষে কালীদাসবাবু জানান, তাঁরা বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছেন। মহকুমাশাসক মৌমিতা বসু বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। |