শিশুবিভাগে বাড়ানো হল আরও ৫টি শয্যা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
মুর্শিদাবাদের দুটি হাসপাতালেই নতুন করে আর কোনও শিশু মৃত্যু ঘটেনি। সেই সঙ্গে ৬১ জন শিশুর মধ্যে ১০ জনকে সোমবার ছুটি দেওয়ায় এই মুহূর্তে ৫১ জন শিশু রোগী বহরমপুর হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি রয়েছে। বহরমপুর জেলা সদর হাসপাতাল ও জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের শিশু বিভাগে গত তিন দিনে ২৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই শিশু-মৃত্যুর ঘটনার পরেই রবিবার কয়েক ঘন্টার ঝটিকা সফরে বহরমপুরে আসেন দুজন স্বাস্থ্য কর্তা-সহ তিন জন। তাঁরা বেশ কিছু নির্দেশও জারি করেন।
সদর হাসপাতালের সুপার পার্থ দে বলেন, “হাসপাতালের শিশু বিভাগে অতিরিক্ত ১২টি শয্যা বাড়ানোর তাঁরা নির্দেশ দেন। সেই মতো আপাতত ৫টি বেড বাড়ানো হয়েছে। পরে বাকি আরও ৭টি বেড বাড়ানো হবে। এর পাশাপাশি এক দিন থেকে সাত দিন, সাত দিন থেকে ২৮ দিন এবং ২৮ দিন থেকে ৭ বছর পর্যন্ত বয়স ও অসুস্থতা অনুযায়ী শিশু রোগীদের পৃথক ভাবে রাখার কথাও স্বাস্থ্য কর্তারা বলেন।” কিন্তু শিশু বিভাগে অতিরিক্ত শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ জারি করা নিয়ে চিকিৎসক মহলে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। শিশু বিশেষজ্ঞদের কথায়, প্রতিটি শয্যার মাঝে ন্যূনতম তিন ফুটের দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। কিন্তু শিশু বিভাগে জায়গার অভাবে এমনিতেই তিন ফুটের দূরত্ব বজায় রাখার মত পরিস্থিতি নেই। তার উপরে অতিরিক্ত ১২টি শয্যা বাড়ানোর ফলে ঘুরে রোগী দেখার মত আর কোনও পরিস্থিতিই থাকবে না। |
|
জঙ্গিপুর হাসপাতালে হাল ফেরেনি। রোগীর মাথার কাছেই আবর্জনা। |
এই মুহূর্তে সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট-সহ ১২ জন নার্স রয়েছেন। এদিকে ৫ জনের মধ্যে শিশু বিশেষজ্ঞ রয়েছেন মাত্র তিন জন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এক জন শিশু বিশেষজ্ঞ বদলি হয়ে চলে গিয়েছেন। তাঁর বদলে নতুন কোনও শিশু বিশেষজ্ঞ দেওয়া হয়নি। অন্য জন ‘অসুস্থতার’ কারণে গত সাত দিন ধরে ছুটিতে রয়েছেন। ফলে তিন জন শিশু বিশেষজ্ঞকে দিয়ে চালানো হচ্ছে শিশু বিভাগ।
এদিকে বহরমপুর জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে শয্যার সংখ্যা মাত্র ২৮টি। কিন্তু শিশু বিভাগে রোগীর ভিড় থাকায় এখন শয্যা-প্রতি ন্যূনতম তিন জন করে শিশু রাখা হয়েছে। এর ফলে শিশু রোগীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এজন্য বয়স ও অসুস্থতা অনুযায়ী রোগীদের পৃথক ভাবে রাখার নির্দেশ জারি করেন স্বাস্থ্য কর্তারা। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ হাসপাতালে রাখার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি ‘বেবি ওয়ার্মার’ থেকে প্রয়োজনীয় মেশিন কেনার কথাও স্বাস্থ্যকর্তারা বলে গিয়েছেন। |
|