|
|
|
|
খরচ পাবেন জওয়ান |
নিয়ম দেখিয়ে আটকানো যাবে না ক্যানসারের টাকা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ক্যানসারের দীর্ঘ চিকিৎসা চালানোর জন্য অর্থসাহায্য চেয়ে কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিআরপি-র এক জওয়ান। কিন্তু যথাযথ নিয়ম ও পদ্ধতি মেনে আবেদন করা হয়নি বলে জানিয়ে কর্তৃপক্ষ তাঁকে চিকিৎসা বাবদ টাকা দিতে অস্বীকার করেন।
কলকাতা হাইকোর্ট সোমবার জানাল, পদ্ধতি মেনে আবেদন হয়নি এবং প্রশাসনিক সম্মতি নেই বলে ক্যানসারে আক্রান্ত সরকারি কর্মী চিকিৎসার খরচ পাবেন না, এটা হতে পারে না। এটা অমানবিক। বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত রায় দিয়েছেন, তরুণ হাজরা নামে সিআরপি-র ওই সহকারী কম্যান্ডারের চিকিৎসা খরচ বাবদ চার লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা চার সপ্তাহের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার বাসিন্দা তরুণবাবু শিলিগুড়িতে কর্মরত। তাঁর আইনজীবী মুজিবর রহমান বলেন, তরুণবাবু ছুটিতে বাড়ি আসার পরে হঠাৎ তাঁর প্রস্রাবদ্বার দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখানোর পরে চিকিৎসক তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাঁকে নীলরতন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পরেও উন্নতি না-হওয়ায় আত্মীয়েরা তরুণবাবুকে চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। ২০১০ সালের এপ্রিলে ওই হাসপাতাল জানিয়ে দেয়, তরুণবাবু ক্যানসারে আক্রান্ত। সেই সময় তরুণবাবু বেশ কয়েক বার ফোনে অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং নিজের অবস্থার কথা জানান।
এর পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই জওয়ানকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়ালে। এখন তিনি বাড়িতে চিকিৎসাধীন। মুম্বইয়ে থাকার সময় তরুণবাবু সিআরপি-র আঞ্চলিক অফিসে দেখা করে তাঁর প্রাপ্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন। তিনি তাঁর চিকিৎসা বাবদ খরচের হিসেব ও প্রমাণপত্র দিয়ে তাঁর অফিসে আবেদন জানান। তরুণবাবু বলেন, তাঁর সঞ্চয় এবং স্ত্রীর গয়নাগাঁটি সব শেষ। কিন্তু টাকা জোগাড় করতে না-পারলে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাবে। সিআরপি তরুণবাবুকে জানায়, তিনি দিল্লিতে বাহিনীর ডিআইজি (মেডিক্যাল)-র কাছে পদ্ধতি মেনে আবেদন করেননি। তাই তিনি খরচ পাবেন না।
তরুণবাবু তার পরেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সিআরপি জানায়, ওই জওয়ান নিয়ম মেনে আবেদন না করায় তিনি চিকিৎসার খরচ পাবেন না। আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল যে ক্যানসারে আক্রান্ত এবং হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে, তার প্রমাণ রয়েছে। ক্যানসারে আক্রান্ত একটি মানুষ শারীরিক এবং মানসিক ভাবে কী অবস্থায় থাকেন, তা অনুভব করার ক্ষেত্রে খামতি রয়েছে সিআরপি-র কর্মকর্তাদের। বিচারপতি জানান, নিয়ম আর পদ্ধতি দিয়ে মানবিক বিষয়কে অস্বীকার করা অপরাধ। চিকিৎসা বাবদ ওই জওয়ানের যা খরচ হয়েছে, তা মিটিয়ে দিতে হবে। |
|
|
|
|
|