৫৯৯ শয্যার অনুমোদন • রয়েছেন ৯০০ রোগী
হাসপাতালে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী
ত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবা বেহাল দশা সোমবার ঘুরে দেখলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। এ দিন বেলা ১১ টা নাগাদ তিনি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। হাসপাতাল সুপারের ঘরের সামনে রাস্তার উপর জলকাদায় এক অসুস্থ প্রৌঢ়া প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছেন দেখে গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমে পড়েন। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছেছেন হাসপাতাল সুপারও। হাসপাতাল চত্বরে ওই প্রৌঢ়া ৮/৯ দিন এ ভাবে পড়ে থাকলেও কর্তৃপক্ষের সামান্য মানবিকতা, গরিব মানুষের প্রতি সহানূভূতি নেই কেন সেই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। সুপার তাঁকে বোঝাতে গেলে বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করেন, সপ্তাহখানেক আগে বৃষ্টির মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ রোডে ওই প্রৌঢ়া পড়ে কাতরাচ্ছিলেন। মাটিগাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মোহন সিংহ-সহ স্থানীয় কয়েক জন ভ্যানরিকশা করে তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করাতে নিয়ে এসেছিলেন। অথচ অজ্ঞাত পরিচয় ওই বৃদ্ধাকে ভর্তি করাতে রাজি হয়নি হাসপাতালের কর্মীরা। সেই থেকে হাসপাতালের চত্বরেই রয়েছেন ওই প্রৌঢ়া। সব শুনে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী সুপারকে নির্দেশ দেন, “এ সব কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না। এখনই ওঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা করে আগে সুস্থ করুন। তার পর খবর দিন। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। তাদের বলে ওই প্রৌঢ়ার কিছু একটা ব্যবস্থা আমরা করব।” গৌতমবাবু এর পর নিজেই প্রৌঢ়াকে তুলতে গেলে সুপার এবং লোকজন এগিয়ে যান। বৃদ্ধাকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। হাসপাতাল চত্বরে এমন আরও কয়েক জন ভবঘুরে বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, এক তরুণী রয়েছে জেনে, এমন মোট কত জন আছেন তা বিস্তারিত জানাতে বলেন সুপারকে। সেই মতো শীঘ্রই তাঁদের জন্য ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন।
মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে পড়ে থাকা প্রৌঢ়ার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের সুপারকে নির্দেশ
দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গৌতম দেব। সোমবার ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
আরও অভিযোগ, রবিবার ১০টি শিবির করার ক্ষমতা রয়েছে বলে স্বীকার করলেও গত রবিবার কেন্দ্রীয় ব্লাড ব্যাঙ্ক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ, শল্য বিভাগে গেলে দেখতে পান শয্যার অভাবে করিডরে শুয়ে রয়েছেন পদ্মাশ্রী, রিনা বিশ্বকর্মার মতো অন্তত ১০০ জন রোগী। কোথাও একই শয্যায় ৪/৫ জনকে কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে। সিটিস্ক্যান বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। মেডিসিন-সহ কয়েকটি বিভাগে পেয়িং বেড চালু করার প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। সময় মতো অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ না হওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়। এমন অনেক সমস্যার কথা জানতে পারেন মন্ত্রী। হাসপাতাল সুপার এবং অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “শয্যার অভাব থেকে শুরু করে ৩৪ বছর ধরে এই মেডিক্যাল কলেজে অনেক সমস্যা জমে রয়েছে। এক দিনে তা মেটানো যাবে না। হাসপাতালের ‘স্ট্যাটাস রিপোর্ট’ দিতে সুপারকে বলেছি। স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে কী কী প্রয়োজন সে বিষয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনা তাঁরা দেবেন। পরিষেবা মান উন্নত করতে আমরা সচেষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হাতেই স্বাস্থ্য দফতর রেখেছেন। তিনি এটা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।” মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫৯৯ টি শয্যার অনুমোদন থাকলেও বর্তমানে প্রায় ৯০০ জন রোগী রয়েছেন। অথচ চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী ,সাফাই কর্মী রয়েছে অনুমোদিত শয্যা অনুপাতে। সেই কারণে পরিষেবার খামতি থেকেই যাচ্ছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মীর অভাব রয়েছে। বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে কোনও রকমে কাজ চালাতে হচ্ছে। সিটিস্ক্যান মেরামত করতে ১২ লক্ষ টাকা দরকার। হাসপাতালে পূর্ত বিভাগের বিভিন্ন মেরামতির কাজ সঠিক ভাবে হচ্ছে না। সপ্তাহে ২ বার ১০০ টি করে অক্সিজেন সিলিণ্ডার নির্দিষ্ট সংস্থার তরফে রামপুরহাট থেকে সরবরাহ করা হলেও অনেক ক্ষেত্রে সময় মতো সে সব এসে পৌঁছয় না। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অনুপ রায়, সুপার শৈবাল গুপ্তরা জানান, হাসপাতালের উন্নয়নে কী কী দরকার দ্রুত সেই পরিকল্পনা তাঁরা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠাবেন।
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.