|
|
|
|
ট্রাক-গাড়ির সংঘর্ষ, মৃত্যু ৪ আরোহীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বেলিয়াতোড় |
ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল একটি গাড়ির চার জন আরোহীর। রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ দুঘর্টনাটি ঘটেছে বেলিয়াতোড় থানার বনগাঁর কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই তিন জনের মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন গাড়ির চালক সমীর লোহার (২৭), গাড়ির মালিক রথীন্দ্রনাথ মণ্ডল (৩৮) এবং তাঁর কর্মচারী সন্তু রায় (৩২)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রথীন্দ্রনাথবাবুর পড়শি কাজল ভাণ্ডারিকে (২৭) বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাকটি আটক করা গেলেও তার চালক পালিয়েছে। তাঁর সন্ধান করা হচ্ছে। মৃতেরা সকলেই সোনামুখীর বাসিন্দা।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রথীন্দ্রনাথবাবুর আদি বাড়ি ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ায়। বছর কুড়ি ধরে তিনি সোনামুখীতে থেকে কাপড় কাচার সাবান বিক্রি করতেন। প্রায় এক বছর আগে চাকুলিয়ায় এক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর বাবারও। রথীন্দ্রনাথবাবু সোনামুখীর রানিবাজার এলাকার বাসিন্দা। তাঁর গাড়ির চালক সমীরের বাড়ি সোনামুখীরই রথতলায়। রথীনবাবু সঙ্গে নিয়েছিলেন তাঁর কর্মচারী, গনগনিডাঙার বাসিন্দা সন্তু রায়কে। রথীনবাবুর পড়শি কাজল ভাণ্ডারি দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। পনেরো দিনের ছুটিতে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। রবিবার ব্যবসার কাজে রথীন্দ্রনাথবাবু ওই তিন জনকে নিয়ে চাকুলিয়ায় গিয়েছিলেন। নানা জায়গা ঘুরে তাঁরা বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার বাঁকে দুঘর্টনাটি ঘটে। এই ঘটনায় সোনামুখী শহরে শোকের ছায়া নেমেছে।
সোমবার দুপুরে বাঁকুড়া মেডিক্যালের মর্গ থেকে দেহগুলি নিতে এসে রথীনবাবুর শ্যালক মানিক দত্ত ও ভগ্নীপতি সঞ্জয় ঘোষ জানান, রথীনবাবুর সোনামুখীর বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, ৮ বছরের ছেলে ও ৫ বছরের একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে রয়েছে। মানিকবাবুদের কথায়, “এমন দুঘর্টনা ঘটবে ভাবতে পারিনি। রাতে খবরটা শোনার পরে বিশ্বাসই করতে পারিনি।” মৃত সন্তুবাবুর দাদা ভোলানাথ রায় বলেন, “ভাই প্রায় ১০ বছর ধরে রথীনবাবুর কাছে কাজ করছিল। বাড়িতে স্ত্রী ও দুই মেয়ে, এক ছেলে রয়েছে। সামান্য জমিও নেই। এখন কী ভাবে ওদের সংসার চলবে, জানি না।” গাড়ির চালক সমীরের দাদা মিঠু লোহার বললেন, “ভাই প্রায় ১৫ বছর ধরে রথীনবাবুর গাড়ি চালাচ্ছে। কোনও দিনও দুঘর্টনা ঘটেনি। এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে তা কখনও।” তাঁরও চিন্তা, সমীরবাবুর স্ত্রী ও আড়াই বছরের মেয়েকে কী ভাবে বড় করবেন।
কাজল ভাণ্ডারীর দাদা উজ্বল ভাণ্ডারী বলেন, “ভাই চাকরি পাওয়ার পর বোনের বিয়ে দিয়েছিল। এ বার আমরা ওর বিয়ের সম্বন্ধ দেখছিলাম। খড়ের ছাউনির কাঁচা বাড়ির বদলে পাকা বাড়ি তৈরির কাজ তদারকি করার জন্য সে ছুটি নিয়ে এসেছিল। ওদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার জন্যই সে বেরিয়েছিল। কিন্তু, ওর কপালে যে এই পরিণতি লেখা রয়েছে, তা জানতে পারিনি।”
অন্য দিকে, সোমবার বরাবাজারের টকরিয়া গ্রামের কাছে বোরো থানার দিঘিগামী একটি বাস উল্টে ৪০ যাত্রী জখম হয়েছেন। |
|
|
|
|
|