|
|
|
|
কালকার যাত্রীদের খোঁজ নেই, উদ্বেগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলঙ্গি |
সংসারের হাল ফেরাতে কাজের সন্ধানে কালকা মেলে দিল্লি রওনা দিয়েছিল জলঙ্গির সেলিম মিঞা। কিন্তু রবিবার দুপুরে উত্তরপ্রদেশের মালওয়াঁ স্টেশনের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনার পর থেকেই বছর ১৯-এর সেলিম খোঁজ নেই। পুলিশ ও প্রশাসনের কাছেও ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় ডোমকল মহকুমা এলাকার কেউ হতাহত হয়েছেন, এমন কোনও খবর নেই। তাঁর পরিবারের আত্মীয়-পরিজন মালওয়াঁর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। কান্দির জয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়পুর গ্রামের শিস মহম্মদের খোঁজ নেই।
সেলিমের সঙ্গে হাওড়া-কালকা মেলে দিল্লি রওনা দেয় পাশের গ্রাম জয়কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা লালু দফাদার। ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম অবস্থায় লালু স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনায় নিজের মোবাইল হারিয়ে যাওয়ায় অপরিচিত অন্য এক জনের কাছ থেকে মোবাইল চেয়ে লালু কোনও মতে নিজের খবর বাড়িতে জানান। |
|
সন্ধান নেই প্রিয়জনের। শোকগ্রস্ত পরিজনেরা। |
এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনার খবর শোনার পর থেকেই সেলিমের মা আশরাফুন বিবি দারুণ ভাবে ভেঙে পড়েছেন। ছেলের ছবি বুকে আঁকড়ে তিনি কেঁদে চলেছেন। পাড়া-প্রতিবেশী মহিলারা তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ছেলের কথা বলতে বলতেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন। সোমবার বিশ্বাসপাড়ায় বাড়িতে গেলে দেখা যায়, কথা বলার মত অবস্থায় নেই মা আশরাফুন বিবি।
পরিবার ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা যায়, সেলিমের বাবা ১৬ বছর আগে পরিবার ছেড়ে চলে যান। তার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। পরের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে, বিড়ি বেঁধে অনেক কষ্ট করে তিন ছেলেমেয়েকে বড় করে তোলেন আশরাফুন বিবি। বছর দুয়েক আগে বড় মেয়ে সনিয়া আখতারের বিয়েও দেন তিনি। দুই ছেলে সেলিম ও বাবর। সেলিম আগে কেরলে শ্রমিকের কাজ করতেন। কিন্তু কেরলে ভাল উপার্জন না হওয়ায় সেলিম কাজের সন্ধানে দিল্লি পাড়ি দেন। দিদির বিয়েতে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়ার কথা জানিয়েছিল ওই যুবক। কিন্তু টানাপোড়নের সংসারে তা দেওয়া হয়নি। কয়েক মাস কেরলে শ্রমিকের কাজ করেও যৌতুকের টাকা না জমাতে পারেনি সেলিম। বাড়ি ফিরে তখনই জানিয়েছিল এবার দিল্লিতে কাজে যাবে। ডোমকল মহকুমা পুলিশ অফিসার সুবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সেলিমের ব্যাপারে সরকারি ভাবে আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই জানি না। গোটা বিষয়টি খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।” একই কথা বলেন ডোমকলের এসডিও মনোজ চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, “ডোমকল মহকুমা এলাকার কেউ ওই ঘটনায় হতাহত হয়েছে কিনা জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।” |
|
|
|
|
|