বাসিন্দাদের দাবি মেনে শুরু ভাঙনরোধের কাজ
বশেষে সম্মিলিত প্রতিরোধের ফলে ভাগীরথীর ভাঙন রোধ সরকারি নিয়ম মেনেই শুরু হল।
নদীর ভাঙন প্রতিরোধের নামে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা জলে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন বহরমপুর শহর লাগোয়া ভাগীরথীর পশ্চিমপাড়ের বাজারপাড়ার বাসিন্দারা। তার ফলে গত শনিবার থেকে বাজারপাড়া এলাকায় ভাগরীথী নদীর পাড় বাঁধানোর কাজ বন্ধ থাকে। অবশেষে সোমবার সেচ দফতরের কর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ মেনে নিয়ে সরকারি নিয়ম মোতাবেক নদীভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু করতে ঠিকাদার সংস্থাকে নির্দেশ দেন সেচ দফতরের কর্তারা।
ভাগীরথীর পূর্বপাড়ে বহরমপুর শহর। আর পশ্চিমপাড়ে রয়েছে রাধারঘাট ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাজারপাড়া। বাজারপাড়া ও বহরমপুর শহরের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করেছে ভাগীরথীর উপর প্রায় পাঁচ দশক আগে নির্মীত রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী সেতু। সেতুর পশ্চিমপাড় থেকে দক্ষিণ দিক বরাবর ভাগীরথীর খাঁড়িতে ঝুলে রয়েছে বাজারপাড়ার বসতি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়েও গিয়েছে।
ভিটে যেন ঝুলছে ভাগীরথীর গায়ে। নিজস্ব চিত্র।
সেতুর গোড়াটুকু বোল্ডার দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া হলেও দক্ষিণ প্রান্তের গোড়া থেকে দক্ষিণ দিক বরাবর ১০০ মিটার পর্যন্ত এলাকা ভাঙনের ফলে ইংরাজি ‘ইউ’ অক্ষরের আকৃতি নিয়েছে। ফলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগকারী ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ভাগীরথী নদীর রামেন্দ্রসুন্দর সেতুটিও ভাঙনে বিপন্ন। সেচ দফতরের বহরমপুর বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার আশিস দত্ত বলেন, “ভাগীরথীর ওই সেতু ও জনবসতি রক্ষা করতে ১২০০ মিটার এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য রাজ্য সেচ দফতরে পাঠানো হয়েছে। নাবার্ড থেকে যাতে গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (আইআইডিএফ) খাতে ওই টাকা বরাদ্দ করা হয় তার জন্য তদ্বিরও চলছে।” কিন্তু তার আগেই নদীভাঙন ভাবিয়ে তুলেছে মুর্শিদাবাদ জেলার সেচ দফতরকে।
সেই কারণেই সেতু থেকে দক্ষিণ দিক বরাবর ১০০ মিটার দীর্ঘ এলাকায় নদীভাঙন প্রতিরোধের জন্য আপৎকালীন কাজ হিসাবে সেচ দফতর থেকে ১৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। ওই টাকায় মাটি বোঝাই করা ২৫টি বস্তা নাইলনের দড়ি দিয়ে বেঁধে এক-একটি ‘ক্রেট’ তৈরি করে নদীর পাড়ে ফেলা হবে। এ ভাবে বর্ষার সময় ওই এলাকার ভাঙন আটকানোর কথা। সেই মতো গত শুক্রবার কাজ শুরু হয়। কিন্তু পর দিন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্থানীয় বাসিন্দারা কাজ বন্ধ করে দেন। বাজারপাড়ায় ভাগীরথীর খাঁড়িতে ঝুলছে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক তথা রাজ্য সরকারের লোক সংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের অন্যতম উপদেষ্টা শক্তিনাথ ঝাঁয়ের বসতবাড়িও। শক্তিনাথবাবু বলেন, “বাইরে থেকে মাটি ভর্তি বস্তা নিয়ে এসে ভাঙন প্রতিরোধ করা কথা। কিন্তু তার বদলে নদীর পাড়ের মাটি কেটে বস্তার অর্ধেক ভর্তি করে নদীতে ফেলা হচ্ছে। এমনকী নদীপাড়ে থাকা বসতির ভিটে পর্যন্ত কেটেও বস্তায় ভরা হচ্ছে। ফলে স্থানীয় মানুষজন বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।”
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থার মালিক শোভন রায়ের জবাব, “ভাঙন প্রতিরোধের জন্য খাড়ি হয়ে থাকা নদীপাড় কেটে ঢাল তৈরি করতে হয়। ঢাল তৈরি করতে কাটা মাটি নষ্ট না করে বস্তা বোঝাই করে নদীতে ফেলা হয়েছে সব পক্ষের অনুমতি নিয়েই।” সোমবার সরজমিনে এলাকা ঘুরে দেখে সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার আশিস দত্ত বলেন, “পাড়ের মাটি রক্ষা করার জন্যই ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা। সে ক্ষেত্রে পাড়ের মাটি দিয়ে বস্তা বোঝাই করা চলবে না। এ কথা ঠিকাদার সংস্থাকে বলে দেওয়া হয়েছে। সেলাই-এর প্রয়োজনে বস্তার ৫-৬ ইঞ্চি বাদ দিয়ে পুরোটাই মাটি ভর্তি করার কথাওবলে দেওয়া হয়েছে।” সোমবার দুপুর থেকে সেই মতো ভাগীরথীর ভাঙন প্রতিরোধের কাজ ফের শুরু করা হয়েছে বলে আশিসবাবুর দাবি।
First Page Murshidabad Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.