ধোনির কাছ থেকে এটা আশা করিনি
মিনিকার উইন্ডসর পার্কে রবিবার যা হয়েছে, তা টেস্ট ক্রিকেটের পক্ষে একেবারেই খারাপ একটা বিজ্ঞাপন। প্রথমেই বলে রাখি, ৪৭ ওভারে ১৮০ মোটেই আহামরি কিছু লক্ষ্য নয়। তা-ও বুঝতাম, যদি উইকেটটা খারাপ হত, বল হঠাৎ লাফাত বা নিচু হত। সেরকম কিছু খেলা দেখে অন্তত আমার মনে হয়নি। যখন খেলা বন্ধ হল, ৯০ বলে ৮৬ রান দরকার ছিল। হাতে তখনও সাতটা উইকেট। ক্রিজে রাহুল আর লক্ষ্মণ। মানছি দেবেন্দ্র বিশু রাউন্ড দ্য উইকেট এসে নেগেটিভ বোলিং করছিল। সে তো করবেই। কিন্তু রাহুল বা লক্ষ্মণ তো এই পরিস্থিতিতে শেন ওয়ার্ন বা মুরলীধরনের নেগেটিভ বোলিংও সামলেছে। সেখানে কোথায় দেবেন্দ্র বিশু!
সবচেয়ে অবাক হচ্ছি ধোনির মন্তব্যে। ও বলেছে, ‘রান তাড়া করলে হেরে যেতে পারতাম’। ‘জেতার চেষ্টা করিনি, ড্রয়ে সন্তুষ্ট থাকছি’ বলাটা এক আর ‘জিততে গেলে হেরে যেতে পারতাম’ বলাটা আর এক। তার মানে তোমার মিডল অর্ডারের উপর তোমার আস্থাটাই নেই। বিশ্বের এক নম্বর টিম, ৪৭ ওভারে অল আউট হয়ে যেত? একটা-দুটো উইকেট পড়লেই এত চাপ হয়ে যাবে? দুঃখিত, মানতে পারলাম না। ধোনির ক্যাপ্টেন্সিতে নেতিবাচক কিছু এত দিন অন্তত চোখে পড়েনি, এই প্রথম পড়ল। এই সিদ্ধান্ত একেবারেই ধোনিসুলভ নয়। ওর মতো ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে এটা আশা করিনি।
গোটা সিরিজটার দিকে তাকালে ধোনির টিমের জন্য অনেক ইতিবাচক দিক চোখে পড়বে। রাহুল আর লক্ষ্মণের ব্যাটিং, ইশান্ত আর প্রবীণ কুমারের বোলিং, প্রতিটা টেস্টে বিপক্ষের উপর চেপে বসা। কিন্তু ফলাফলে সেটা ধরা পড়ছে না। ওয়ান ডে সিরিজে আমরা ৩-০ এগিয়ে থেকে ৫-০ বা ৪-১ করতে পারলাম না। ৩-২ করে ফেলল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই টেস্টটায় শেষ দিন প্রথম দুটো উইকেট পড়ার পরে চন্দ্রপল আর এডওয়ার্ডস ব্যাট করার সময় মনে হল, ক্যাপ্টেনের কাছে কোনও প্ল্যান বি বা প্ল্যান সি নেই। তিন টেস্টের সিরিজে ১-০ জেতা মানে সাধারণত বলা হয়, মোটে একটা টেস্টে জিতেছে, তা হলে সিরিজে ভালই লড়াই হয়েছে। তা কিন্তু নয়। যেখানে ২-০ জিতে ইতিহাস গড়া যেত, সেখানে হেরে যাওয়ার ভয়ে গুটিয়ে থাকল টিমটা। সাত বা আটের দশকের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা নয়ের দশকের অস্ট্রেলিয়ার কাছে যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
এটা যদি একটা দিক হয়, আর একটা দিক হল এই যে দুটো ক্যাপ্টেন কথা বলে ম্যাচ শেষ করে দিচ্ছে এবং দর্শকরা একটা উত্তেজক ম্যাচ দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, সেটা নিয়েও তো ভাবা দরকার। আইসিসি-কে নিশ্চয়ই ভাবতে হবে। কেউ ড্র দেখতে খেলার মাঠে যায় না। সবাই চায় একজনকে জয়ী দেখতে। যারা পয়সা খরচ করে মাঠে গিয়েছিল, বা যে লোকটা রাত তিনটে পর্যন্ত দেশে জেগে টিভি বা ইন্টারনেটের সামনে বসে ছিল, তাদের কাছে কে জবাবদিহি করবে?
আবার বলি, এক নম্বর যারা হবে, তারা সাত নম্বর টিমকে উড়িয়ে দিতে এত দোনামোনা করবে কেন? বিপক্ষকে তারা এমন ভাবে দুমড়ে মুচড়ে দেবে যে শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে কারও কোনও সন্দেহই থাকবে না। সেটা কিন্তু হল না। সামনে ইংল্যান্ড সফর, টেস্ট জয়ের এমন সোনার সুযোগ সেখানে কিন্তু না-ও আসতে পারে।

পয়েন্ট খুইয়েও একে ভারত
টেস্ট সিরিজ ১-০ জিতে এক নম্বর স্থান ধরে রাখল ভারত। যদিও দুটি টেস্ট ড্র করার জন্য দুই পয়েন্ট কাটা গেল। ভারতের পয়েন্ট এখন ১২৬। দুইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা (১১৭) এবং তিনে ইংল্যান্ড (১১৬)। হরভজন সিংহ শেষ টেস্টে ছয় উইকেট নিয়ে বোলারদের মধ্যে ছয়ে উঠে এলেন। এর জন্য অবশ্য ছয় থেকে এক ধাপ নেমে গেলেন সিরিজে ২২ উইকেট নেওয়া ইশান্ত শর্মা।
Previous Story Khela Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.