রেলকর্তা থেকে গ্যাংম্যান, বিপদ বাড়াচ্ছে শূন্য পদ
ফের তোপের মুখে রেল বোর্ড।
কালকা মেলে দুর্ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, কেন দীর্ঘ দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে খালি পড়ে রয়েছে রেল বোর্ডের মেম্বার ট্র্যাফিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটি। দেশে রেল চলাচলের মূল দায়িত্বে থাকেন মেম্বার ট্র্যাফিক।
রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে থেকেই গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে মেম্বার ট্র্যাফিকের দায়িত্বও সামলাচ্ছিলেন বিবেক সহায়। মাসখানেক আগে তিনি অবসর নেন। রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগ দিয়েছেন বিনয় মিত্তল। কিন্তু রেল বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ মেম্বার ট্র্যাফিকের পদটি খালিই পড়ে রয়েছে। রেলের ‘অদূরদর্শিতা’-ই এর কারণ বলে প্রাক্তন রেল কর্তারা মনে করছেন।
রেলের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি পদে একই ব্যক্তির থাকা নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন উঠেছে। তা সত্ত্বেও তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ‘সুসম্পর্কের’ সুবাদে এক বছরের বেশি সময় ধরে দু’টি পদেই কাজ করেছেন বিবেক সহায়। যৌথ পদে থাকলে সমন্বয়ের ভাল কাজ হবে বলে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে যে তা হয়নি, একের পর এক দুর্ঘটনায় তা স্পষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন রেল কর্তাদের একাংশই।
শুধু মেম্বার ট্র্যাফিকের পদ নয়। মেম্বার স্টাফ ও মেম্বার ইলেকট্রিক্যালের মতো শীর্ষ পদগুলিও এখন ফাঁকা। একে গত দু’মাস ধরে রেল মন্ত্রকে কোনও পূর্ণমন্ত্রী নেই। তার উপরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি। একাধিক জেনারেল ম্যানেজারের পদ এবং রেল বোর্ডের বেশ কিছু অধিকর্তার পদ খালি। পদ শূন্য নিচু তলাতেও। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও লালুপ্রসাদের জমানায় রেলে কর্মী নিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রেলের সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত গ্যাংম্যান, ট্রলিম্যান, কেবিনম্যান, সহকারী স্টেশন মাস্টার মিলিয়ে প্রায় এক লক্ষ পদ শূন্য পড়ে রয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কিছু পদ পূরণে পদক্ষেপ করেন। নিয়োগের বেশ কয়েকটি পরীক্ষাও হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক গাফিলতিতে নিয়োগের কাজ থমকে রয়েছে। ফলে নিরাপত্তার বিষয়টি ব্যাহত হচ্ছে বলে রেলকর্তাদের অভিযোগ। এক রেলকর্তা বলেন, “নিয়ম করে ট্র্যাক সংরক্ষণ, পয়েন্ট, সেতু ও বৈদ্যুতিক লাইনের পরীক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ায় ইঞ্জিন ও কোচগুলিকে যতটা বিশ্রাম দেওয়া দরকার, তা-ও হচ্ছে না।” প্রতি বছর বাজেটে একাধিক নতুন ট্রেনের ঘোষণা চাপ ফেলছে লাইনের উপর। কানপুর-হাওড়া লাইনের যা বহন ক্ষমতা, তার দেড় গুণ বেশি গাড়ি বর্তমানে ওই পথে চলাচল করে। একই অবস্থা হাওড়া-মুম্বই-সহ একাধিক রুটে। এবং প্রায় কোনও ক্ষেত্রেই লাইনের প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। ট্রেন দুর্ঘটনার সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ সেটাও।

বেহাল রেল
রেলে গ্রুপ সি এবং ডি মিলিয়ে ১ লক্ষের বেশি পদ খালি নিয়োগ প্রক্রিয়া
গ্রুপ সি
• ৪১ হাজার পদের জন্য কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। নিয়োগ অসম্পূর্ণ।
• আরও ৩১ হাজার কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত।
গ্রুপ ডি
• ১৬ হাজার পদে প্রাক্তন গ্যাংম্যান নিযুক্ত।
• ২০১০-এর ডিসেম্বরে আরও ৮৫ হাজার কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। নিয়োগ অসম্পূর্ণ।
• ৪০ হাজার প্রার্থীর শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। অক্টোবরে চূড়ান্ত পরীক্ষা।
দেশে লেভেল ক্রসিং
• ৩২, ৬৯৪। এর মধ্যে প্রহরাহীন ১৪, ৪৫৩।
২০১১, এপ্রিল-জুনে দুর্ঘটনা
• প্রহরাহীন ক্রসিং-এ ১১।
• প্রহারা রয়েছে এমন ক্রসিং-এ ১।
• মুখোমুখি সংঘর্ষ ২।
• ট্রেন লাইনচ্যুত ১২।
Previous Story Desh Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.