নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির পরীক্ষা ‘ক্যাট’ ঘিরে দ্বিতীয় দিনেও বড় রকমের অশান্তি ঘটল আগরতলায়। কংগ্রেসের অভিযোগ, এ দিনও বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। টিএসআর জওয়ানদের চালানো গুলিতে পাপাই সাহা নামে এক তরুণ মারা যান। দু’ তরফে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে ও পুলিশের লাঠিতে ৩০ জন জখম হন। পুলিশের পাল্টা অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগায়, ইটপাটকেল ছোড়ে, থানায় চড়াও হওয়ারও চেষ্টা করে। এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। ‘পুলিশি নির্যাতনের’ প্রতিবাদে আগামী বুধবার আগরতলা পুর এলাকায় ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে ত্রিপুরা যুব কংগ্রেস। এ দিকে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তপন চক্রবর্তী গত কালের ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে বর্ণনা করেছেন। |
গত কাল পুলিশের লাঠিচালনার প্রতিবাদে আজ ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের ডাকে ‘ধিক্কার মিছিল’ বের করার কর্মসূচি নেয়। বেলা তিনটে থেকেই দলে দলে লোক আসতে থাকে কংগ্রেস ভবনের সামনে। প্রায় উল্টো দিকেই আগরতলা পশ্চিম থানা। সেখানে ব্যাপক সংখ্যায় পুলিশ ও টিএসআর মোতায়েন করা হয়েছিল। সওয়া চারটে নাগাদ মিছিলটির মুখ যখন কামান চৌমুহনির কাছে, তখনই মিছিলে থেকে ঢিল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তারপরই গোলমাল বাড়তে থাকে। প্রথমে আগুন লাগানো হয় পুলিশের জলকামানের গাড়িতে। অন্য দিকে কংগ্রেসের অভিযোগ, ধিক্কার মিছিলে পুলিশের গাড়ি হঠাৎ ঢুকে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা এ দিক ও দিক ছুটতে থাকেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এরই মাঝে শোনা যায় গুলির শব্দ। বিক্ষোভ রুখতে গুলি চালানোর আদেশ দিতে ওসি মনীন্দ্র দেবনাথকে টিএসআর চাপ দেয় বলেও একটি সূত্রের খবর। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অন্য দিকে ছোড়া ইটের ঘায়ে গুরুতর জখম হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কমল চক্রবর্তী। দু’ তরফে সংঘর্ষে এলাকা জুড়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ।
এলাকায় শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশে জোরদার পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। থানা সংলগ্ন এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পথচারীদের অভিযোগ, পুলিশ বন্ধ দোকান লাঠি চার্জ করে তছনছ করছে। মাইক নিয়ে মহকুমা শাসক মুসলেমউদ্দিন ১৪৪ ধারা জারি করার কথা ঘোষণা করেন।
গতকাল ও আজকের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছে ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস। আগরতলা প্রেস ক্লাবে জড়ো হয়ে আজ রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকরা তীব্র ভাষায় গতকালের ঘটনার প্রতিবাদ জানান। |