ডাকাতি ও গৃহকর্ত্রীকে হত্যার মামলা
হাইকোর্টে রদ মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ১০ জনের
ক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি ও গৃহকর্ত্রীকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার দায়ে নিম্ন আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ১০ জনকে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন সাজাপ্রাপ্তেরা। সোমবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল এবং বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ড রদ করে ওই ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল।
২০০৮-এর ২১ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ার লেনিন সরণির বাসিন্দা অলঙ্কার ব্যবসায়ী বিমল দাসের বাড়িতে হামলা করে এক দল ডাকাত। বাধা দেওয়ায় বিমলবাবুর স্ত্রী চন্দনা দে-কে (৪৫) চারতলার বারান্দা থেকে ছুড়ে ফেলে তারা। তার পরে ঠান্ডা মাথায় লুঠপাট চালিয়ে, পিঠে বন্দুক ঝুলিয়ে চলে যায়। স্ত্রী-র আর্ত চিৎকার শুনেও সে দিন কিছুই করতে পারেননি বিমলবাবু। ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পরে ভয়ে ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে উঁকি মেরে দেখেছিলেন, রাস্তার পড়ে থাকা চন্দনাদেবীর রক্তাক্ত মৃতদেহ।

চন্দনা দে
রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ডায়েরি অনুযায়ী এই ঘটনা ‘নজিরবিহীন’ হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছিল। রাতারাতি বদলি করে দেওয়া হয়েছিল ঘটনার তদন্তকারী অফিসার তথা স্থানীয় বীজপুর থানার আইসি-কে। রাজ্য পুলিশের বাছাই করা অফিসারদের হাতে দেওয়া হয়েছিল এই খুন ও ডাকাতির তদন্তের ভার। উত্তর প্রদেশের বদায়ুন জেলায় ছদ্মবেশে দিনের পর দিন পড়ে থেকে তদন্তকারীরা গ্রেফতার করেছিলেন ডাকাত দলের পান্ডা শিশুপালকে।
শিশুপালকে জেরা করে ২০০৮-এর এপ্রিল মাসে হুগলির ধনেখালি থেকে ধরা হয় ১৫ জনকে। ২০১০ সালের ৮ জানুয়ারি মূল অভিযুক্ত ১০ জনকে (শিশুপাল, গণপত, বলবীর, বাবুলাল, বাবর আলি, শ্রীকান্ত, প্রেমপাল, ভগবান, বনোয়ারি এবং সূর্য গোলদার) ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন ব্যারাকপুর আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক থার্ড কোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন সাজাপ্রাপ্তেরা। এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আসামীদের ‘দৃষ্টান্তমূলক’ শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু এই ঘটনা ‘বিরলতম’ নয় বলে, তাঁদের মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দেওয়া হল। এ দিন হাইকোটের্র্ হাজির ছিলেন বিমলবাবু। রায় শুনে বাড়ি ফিরে যান খানিকটা হতাশ হয়েই। সন্ধ্যায় বাড়ির নীচে নিজের দোকানে বসে বলেন, “আদালতের রায় মানা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু আমার নিরপরাধ স্ত্রী-কে এত বীভৎস ভাবে মেরে ফেলল যারা, তাদের জন্য চরম শাস্তিই বলবৎ থাকবে বলে আশা করেছিলাম।” বছর তিপ্পান্নর বিমলবাবুর এখন সঙ্গী বলতে দুই ছেলেমেয়ে। যে বারান্দা থেকে চন্দনাদেবীকে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল, সেটি গ্রিল দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন প্রৌঢ়। বললেন, “বারান্দার দিকের দরজাটা বন্ধই থাকে। মাঝেমাঝে ও দিকে চোখ পড়লে এখনও আতঙ্ক হয়!”
Previous Story Calcutta Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.